দেশের জমিতে ব্যবহার উপযোগী ও সুলভ মূল্যের ধান কাটার যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার) উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) গাজীপুরে ইনস্টিটিউট চত্বরে এই কম্বাইন হারভেস্টারটির কার্যক্রম পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এসময় তিনি বলেন, ব্রির বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে ধান কাটার মেশিনটি উদ্ভাবন করেছেন। এটি একটি অসাধারণ সাফল্য। মেশিনটির ধান কাটার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি, দেশের ছোট ছোট জমিতে ব্যবহারের উপযোগী। বিদেশের ইয়ানমারসহ বিভিন্ন কম্বাইন হারভেস্টারের দাম ২৫-৩০ লাখ টাকা, আর এটির খরচ পড়বে ১২-১৩ লাখ টাকা। ব্রির উদ্ভাবিত যন্ত্রটি যদি আমরা স্থানীয়ভাবে তৈরি করে সারাদেশে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিপ্লব ঘটবে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষিকে লাভজনক করতে অনন্য ভূমিকা রাখবে।
ব্রির বিজ্ঞানীরা জানান, তাদের উদ্ভাবিত ব্রি হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টারের ইঞ্জিনটি বিদেশ থেকে নেওয়া। অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবে তৈরি। এর ইঞ্জিনের ক্ষমতা ৮৭ হর্স পাওয়ার। ঘণ্টায় মেশিনটি ৩-৪ বিঘা জমির ধান কাটতে পারে। জ্বালানি খরচ হবে ঘণ্টায় ৩.৫-৪ লিটার। হারভেস্টিং লস শতকরা এক ভাগের কম। আর দাম পড়বে মাত্র ১২-১৩ লাখ টাকা। খণ্ড খণ্ড জমিতেও এটি ব্যবহার করা যাবে। বিদেশ থেকে আমদানি করা যেকোনো কম্বাইন হারভেস্টারের তুলনায় এটি ভালো বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিদায়ী সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, সদ্য যোগদান করা সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে কৃষিমন্ত্রী ব্রির চত্বরে পাঁচতলা নতুন আবাসিক ভবন ‘ব্রি শ্রমিক কলোনী ভবন’ উদ্বোধন করেন। এসময় মন্ত্রী বলেন, নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কৃষি শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মেধা ও মনন আর কৃষি শ্রমিকদের শ্রম ও ঘামে দেশে শতাধিক উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শ্রমিক-মজুরদের দুঃখ কষ্ট হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন। তাই মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে শ্রমজীবী মানুষের আবাসনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ব্রির নবনির্মিত শ্রমিক কলোনি ভবনের একটি বাস্তব উদাহরণ।
একই দিন দুপুরে মন্ত্রী ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। সভায় বিদায়ী সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ও সদ্য যোগদান করা সচিব মো. সায়েদুল ইসলামকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
পুনর্মিলনীতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আবদুর রৌফ, হাসানুজ্জামান কল্লোল, ওয়াহিদা আক্তার, বলাই কৃষ্ণ হাজরা, আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ এনডিসি, মো. রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
নদী বন্দর / সিএফ