করোনার কারণে দু‘বছর ঘরে আটকে থাকা মানুষ নতুন বছর বরণে উৎসবে মেতেছে ফুলের রাজধানী যশোরের গদখালিতে। বছরের প্রথম দিন থেকে নানা বয়সের মানুষ জড়ো হয়ে আনন্দ উল্লাস করছেন। গদখালির বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন নানা বর্ণ ও গন্ধের ফুলের ছড়াছড়ি।
দেশের বিভিন্ন উৎসবে প্রয়োজনীয় ফুলের ৭৫ শতাংশই যায় এখান থেকে। এবারের ইংরেজি বর্ষবরণে গদখালি থেকেই দেড় কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম।
২০২১ সালের ক্লান্তি, গ্লানি ও দুঃখ ভুলতে বন্ধু পরিবার নিয়ে মানুষ জড়ো হচ্ছেন এ ফুলের রাজ্যে। ঘুরে বেড়াচ্ছেন ফুলের বাগানে। স্মৃতি ধরে রাখতে তুলছেন ছবি। করছেন ভিডিও।
যশোর সদরের আফছানা আফরিন পাঁপড়ি বলেন, নতুন বছরের প্রথম দিনটা বাড়িতেই কাটিয়েছি। আজ দেশের ফুলের রাজধানীতে এসে খুবই ভালো লাগছে।
সাতক্ষীরার কলারোয়ার দিপক কুমার শেঠ বলেন, দু’বছর ঘরবন্দি ছিলাম। নির্ভয়ে বাইরে বেড়াতে যেতে পারিনি। এবার অন্তত ফুলের রাজ্যে আসতে পেরে ভালো লাগছে।
নাভারণের কামরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ফুলের রাজধানী যশোরের গদখালিতে এসে নতুন বছরের তৃতীয় দিনটি পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করতে পারছি। খুবই ভালো লাগছে।
ফারজানা আক্তার রিমি বলেন, পরীক্ষা শেষ, তাই কয়েকজন বান্ধবী মিলে গদখালি এসেছি একটু আনন্দ উপভোগ করতে। বান্ধবীদের উপহার দেওয়ার জন্য ফুল কিনেছি। ফুলের বাগানে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছি। সবাই মিলে বেশ আনন্দ করছি।
তরুণ উদ্যোক্তা আল আমিন বলেন, আমি গদখালি বাজারে ও অনলাইনে ফুল বিক্রি করি। গত তিন দিনের বেচাবিক্রি খুব ভালো। বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে শত শত মানুষের সমাগম ঘটে গদখালিতে। তারা এসে ফুল কেনে, ফুলবাগানে গিয়ে ছবি তোলে। এসব দিনগুলোতে একটা উৎসবের আমেজ তৈরি হয় এই এলাকায়।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, এবার ইংরেজি বর্ষবরণে তিন দিনে দেড় কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ৬২৫ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ হচ্ছে। ফুলচাষের সঙ্গে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কৃষক এবং প্রায় এক লাখ শ্রমিক সম্পৃক্ত রয়েছেন।
নদী বন্দর / এমকে