ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় গাইবান্ধায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গত দু’দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। বিপাকে পড়েছেন কৃষিজীবী শ্রমিক ও নিম্ম আয়ের মানুষেরা। চলতি মাসে তিনটি শৈত্যপ্রবাহসহ তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রিতে নামার সম্ভাবনার বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলায় বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে দেখা মেলেনি সূর্যের। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রামের পর গ্রাম। বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। বোরো ধানচাষিরা নতুন বছরের শুরুতেই তীব্র শীতে হতাশায় পড়েছে।
কৃষি শ্রমিক আজাদুল ইসলাম বলেন, শীতের কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। বাতাসে মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। এই আবহাওয়া আরো কয়েকদিন চললে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের কৃষি শ্রমিকদের সংসারে অভাব নেমে আসবে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সোনাইডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, গত দু’দিন থেকে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের ফলে আমাদের ইরি-বোরো ধানের বীজ তলায় পচন ধরেছে। ধানের চারাগুলো লালবর্ণ ধারণ করে মারা যাচ্ছে।
সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ার বাসিন্দা আনন্দ কুমার বলেন, আমি একটি বেসরকারি স্কুলে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করি। প্রতিদিন সকালে মোটারসাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। গত দু’দিনের আবহাওয়ায় রাস্তায় বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। হাত-পায়ে মোজা ব্যবহার করেও রাস্তায় বের হওয়া যাচ্ছে না।
প্রবীণ নাট্যকার ও সাংবাদিক গোবিন্দলাল দাশ জানান, পিঠা ও জামাই মেলা নিয়ে আসে শীত। শীত না এলে কবিতা পূর্ণতা পায় না। তাই কবিতায় মিশে আছে শীতের শত ভাবনা। কিন্তু গত কয়েক দিনের শীতে নিম্ন আয়ের মানুষ ও বৃদ্ধ মানুষরা সমস্যায় পড়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষি গবেষক মো. নজরুল ইসলাম জানান, শীতের হাত থেকে বীজতলা রক্ষা করতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। অথবা সকালের শিশিরগুলো বীজের গা থেকে থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে।
বগুড়া আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসাইন জানান, জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এই মাসে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করতে পারে। যার মধ্যে একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহের রূপ নিতে পারে। এর তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রিতে আসতে পারে।
নদী বন্দর / বিএফ