নাইজেরিয়ার জামফারা রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত দুইশো জনে। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় লোকজন ও দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে এসব তথ্য।
দেশটির ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতির সঙ্গে সাধারণ মানুষ যখন লড়াই করছে তখন ২০২০ সালের শেষ দিকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে গণহারে অপহরণসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে।
হামলার কবলে পড়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, তিন শতাধিক অস্ত্রধারী লোক আটটি গ্রামে হামলা চালায় এবং নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। যদিও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৫৮ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
হামলার ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়া গ্রামবাসীরা ফিরে গিয়ে দেখেন যে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। তাদের দাবি অন্তত দুইশো জনের বেশি মারা গেছেন এ ঘটনায়।
সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ওই অঞ্চলের দুটি এলাকায় অভিযান চালালে সশস্ত্র দুই গোষ্ঠীর প্রধানসহ একশজন নিহত হন। সেই ঘটনা প্রতিশোধ নিতে তিনশ বন্দুকধারী হামলা চালায় আটটি গ্রামে। এতে জামফারার আনকা স্থানীয় সরকারের অধীন এলাকায় অন্তত ৩০ জন নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামলার সময় বাড়িঘর ও দোকানপাটেও আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। মাকেরি নামে এক ব্যক্তি নিশ্চিত করেন যে, হামলায় তিনি তার তিন সন্তান ও স্ত্রীকে হারিয়েছেন। তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
হামলার সময় পালিয়ে বাঁচা এক বাসিন্দা আবু বাকার বেলো বলেন, হামলার সময় গ্রামগুলোতে যে পরিমাণ নিরাপত্তা কর্মী ছিল তার চেয়ে হামলাকারীদের সংখ্যা ছিল অনেক।
নাইজেরিয়ার যেসব রাজ্যে নিয়মিত অপহরণের ঘটনা ঘটে, জামফারা তার অন্যতম। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে টেলিযোগাযোগ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
হামলার ঘটনা সম্পর্কে জামফারার গভর্নরের এক মুখপাত্র বলেছেন, আনকা এলাকায় হামলা চালানো বন্দুকধারীদের রুখে দিয়েছে সামরিক বাহিনী। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
প্রতিবেশী দেশ মালি ও বারকিনা ফাসোর মতো নাইজেরিয়াও ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়েদা ও আইএসের নিয়মিত টার্গেটে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
২০১২ ও ২০১৩ সালের পর থেকে আফ্রিকার বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। এরপর থেকেই সেখানকার সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। গ্রামগুলোতে অভিযান চালিয়ে অপহরণ, গরু চুরি ও ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া প্রায়ই পশ্চিমা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
নদী বন্দর / পিকে