যানজট থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে দ্রুত এগিয়ে চলছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ। এই প্রকল্পের উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার অংশের কাজ প্রায় শেষ। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো রুট ভায়াডাক্টে সংযুক্ত হয়েছে। ফলে সড়কের কাজও সমাপ্ত হয়েছে। এ কারণে সড়ক থেকে রোড ব্যারিয়ারসহ মেট্রোরেলের সব নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে সড়ক প্রশস্ত করার কাজ এখন পুরোদমে চলছে।
সড়কে বেশি স্বস্তি দেখা গেছে রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার পথে। এই সড়কে রোড ব্যারিয়ার সরিয়ে নতুন করে পিচঢেলে সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে। এ সড়কগুলো দীর্ঘদিন আবদ্ধ ছিল মেট্রোরেল নির্মাণের কারণে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ওই অংশে সড়কে নেই মেট্রোরেলের কোনো নির্মাণসামগ্রী। সড়কের মাঝখানে মেট্রোরেলের পিলারের পাশ ঘেঁষে কংক্রিটের ছোট ছোট ওয়াল দেওয়া হয়েছে। ছোট ওয়াল মূলত পিলারকে আঘাত থেকে রক্ষা করবে। এরপরে ছোট ছোট কংক্রিকেটর ওয়াল মাটি ভরাট করা হয়েছে। পাশাপাশি লাউ, পুঁইশাকসহ পাতাবাহারি নানা জাতের গাছ লাগানো হয়েছে। মেট্রোরেল সড়কপথের মালিক উত্তর সিটি করপোরেশন। নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরে মেট্রোরেলের সড়ক ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এর পরে মেট্রোরেল সড়কের মাঝখানে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নানা প্রজাতির কাছ লাগানো হবে।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-৬) উপ-প্রকল্প পরিচালক (ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন) শান্তি মনি চাকমা বলেন, মেট্রোরেল নির্মাণের পরে নিচের সড়ক সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কারণ এই সড়কের মালিক তারা। তাদের মাধ্যমেই মূলত সৌন্দর্যবর্ধনের কাজগুলো করা হবে। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নানা জাতের গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
মেট্রোরেলের পথজুড়ে পাতাবাহার, কাঞ্চন, করবী, গন্ধরাজ, কুর্চি, রাধাচূঁড়া, হৈমন্তী, টগর, সোনালু, কৃষ্ণচূঁড়া, কদম, বকুল, পলাশসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও রুটে মাত্র কয়েকটি স্টেশনের নীচের সড়ক এখনো উন্মুক্ত হয়নি। এগুলোর জঞ্জাল পরিষ্কারে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, এমআরটি-৬ বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৭৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৯০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৭৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ৭০ দশমিক ৯১ শতাংশ। মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশে সোশ্যাল স্টাডি, হাউজহোল্ড সার্ভে, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন পরিকল্পনা, পরিবেশের ওপর প্রভাব এবং বেসিক নকশা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ডিটেইলড ডিজাইন ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান আছে।
মেট্রোরেলে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ছয়টি করে কার। যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে এ ট্রেন। উভয়দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনের সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।
নদী বন্দর / বিএফ