বৃষ্টির পানি ও উজানে ভারত হতে নেমে আসা ঢলের পানিতে সীমান্তঘেঁষা পুনর্ভবা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাপাহার উপজেলার পুড়ইল বিল এলাকার কৃষকদের শত শত বিঘা জমির বোরো ধান এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সাপাহার উপজেলার হাপানিয়া, আলাদিপুর, বেলডাঙ্গা, আন্ধার দিঘী, শ্রীধরবাটিসহ বেশ কিছু গ্রামের অসহায় কৃষকদের তলিয়ে যাওয়া ধানের জমিতে দাঁড়িয়ে বিলাপ করে কাঁদতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে আজ বুধবার ভোরে ওই এলাকায় গেলে অসংখ্য কৃষক সাংবাদিককের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের ঘিরে ধরেন এবং মনের চাপা কান্নার কথাগুলি বলেন। এসময় বেলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলেন, এই বিলে আমার ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগানো ছিল কামলা সংকটের কারণে ক্ষেতের ধান কাটতে একটু দেরি হওয়ায় দু’-একদিনের মধ্যে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে তার-সহ অসংখ্য কৃষকের জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পুড়ইল বিল নামক ওই বিল থেকে কৃষকরা একটুকুও ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেনি। যে কৃষক দু’-এক বিঘা জমির ধান কেটেছিলেন, হঠাৎ ঢলের পানিতে কাটা ধানগুলোও ভেসে চলে গেছে। তড়িৎগতিতে বিলের পানি নেমে না গেলে কোনো কৃষকই ওই মাঠ থেকে এক মণ ধানও ঘরে তুলতে পারবেন না। পাকা ধানে মই দেওয়ার মতো হঠাৎ ঢলের পানিতে ওই এলাকার শত শত কৃষকের সোনালী স্বপ্ন এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানান কৃষকরা।
কৃষক আব্দুল জব্বারকে তার তলিয়ে যাওয়া ক্ষেতের ধান সংগ্রহ করতে দেখা গেছে মাঠের অথৈ পানিতে। জব্বার বললেন, আমার তো সবই গেছে। এখন যা পাই তাই সংগ্রহের চেষ্টা করছিমাত্র। ওই এলকার কৃষকরা তাদের সর্বস্ব খুইয়ে এই বোরো চাষাবাদ করেছিলেন। বর্তমানে তারা একটুকুও ধান ঘরে তুলতে পারবে না। ভবিষ্যতে কীভাবে তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকবেন, এই চিন্তার ছাপ সকলের মুখে চোখে। কৃষকদের মতে, পুড়ইল বিলে কমপক্ষে ৫ বিঘা জমির সম্পূর্ণ পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
তবে উপজেলা কৃষি দপ্তরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, তিনি সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। তার মতে ওই এলাকায় একশ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ রয়েছে পানির নিচে। পুড়ইল বিল এলাকায় ক্ষেতের ধান তলিয়ে যাওয়ায় শত শত কৃষকের গগনবিদারী আর্তনাদ ও দুশ্চিন্তায় সেখানকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
নদী বন্দর/এসএফ