যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জেলার সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহে এ গ্রামের ৫ শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে দুদিনেই ৩ শতাধিক ভেঙেছে।
বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রায় ৫ কিলোমিটার ভাটিতে কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলী গ্রামটির অবস্থান। প্রতিবছর যমুনার পানি বৃদ্ধির সময় এবং পানি কমার সময় এ এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এক সপ্তাহ আগে ভাঙন শুরু হয়। ৩ দিন ধরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
চরপৌলী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদী তীরের মানুষ ঘর-বাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। গাছগুলোও কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। নদী তীরে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়ার কর্মযজ্ঞ। এই এলাকার আব্দুর রশীদ শেখ, খন্দকার আলমাস মিয়া ও কাশেম মন্ডলের বাড়ি শুক্রবার বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের আভাস পেয়ে তারা ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন।
ওই গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। তাদের অনেক দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।
ইউনুস আলী জানান, প্রতিবছর এই গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু এখানে এখনো বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। তাই প্রতি বছর শতশত মানুষ গৃহহারা হচ্ছেন। সোবহান মিয়া জানান, এ গ্রামের অনেককেই ভাঙনের কারণে এক জীবনে কয়েকবার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন।
মমিনুর রহমান মিয়া জানান, ৩ বছরে তিনি ভাঙনের কারণে ৩ বার বাড়ি স্থানান্তর করেছেন। এবারও সেই একই কারণে ঘরবাড়ি স্থানান্তর করতে হচ্ছে।
শুধু বাড়িঘর নয়, চরপৌলী মিন্টু মেমোরিয়াল হাইস্কুল, চরপৌলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরপৌলী দাখিল মাদ্রাসা, উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকির মুখে রয়েছে। যে কোনো সময় নদী গর্ভে এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিলীন হতে পারে।
কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, ভাঙনের বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদে জানিয়েছেন। মাত্র কয়েকদিনেই ৫ শতাধিক বাড়ি বিলীন হয়েছে। ভাঙন রোধে এখানে বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। তা নাহলে আগামী দু’এক বছরের মধ্যেই চরপৌলী গ্রামটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে জরুরি কাজ করে এ ভাঙন ঠেকানো যাবে না। শুকনো মৌসুমে এখানে স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু হবে। সে কাজের দরপত্র আহ্বান খুব শিগগিরই করা হবে।
নদী বন্দর/এসএফ