আকস্মিক বন্যায় চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি আর কয়েকশ একর ফসলি জমি। বাংলাদেশে নিডস অ্যাসেসমেন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (এনএডব্লিউজি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকস্মিক বন্যার কারণে এই অঞ্চলের পাঁচটি জেলায় ক্ষতির শিকার হয়েছেন সোয়া চার লাখেরও বেশি মানুষ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিচু এলাকায় বসবাসকারী মানুষেরা।
বন্যা পরিস্থিতি ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, খাদ্য, বাসস্থান এবং স্বাস্থ্যসেবার তীব্র সংকট যেমন তৈরি করেছে। একইভাবে চরম প্রভাব ফেলেছে অনেকের জীবিকাতেও। এছাড়া বন্যার পানির কারণে বিদ্যুতহীন আর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন এই এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবের।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় ভয়াবহ আকস্মিক বন্যা লক্ষাধিক মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করছে এবং এই মূহুর্তে তাদের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। তবে এমন পরিস্থিতিতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সদা প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
এদিকে, বন্যা দুর্গত এলাকায় সহায়তার জন্য জরুরি তহবিল থেকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে প্রায় চার কোটি সহায়তা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস (আইএফআরসি)। যা বন্যায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয় করা হবে।
এ বিষয়ে আইএফআরসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডেলিগেশনের প্রধান সঞ্জীব কাফলে বলেন, বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুমের শুরুমাত্র, আর ভয়াবহ এই প্রারম্ভিক বন্যা এরইমধ্যে লাখ লাখ মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে আগামী দিনগুলোতে আরও বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির মতো মৌলিক বিষয়গুলো ছাড়াও যে কোনো ধরনের সহায়তার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে দরকার পানি কমতে শুরু করার পর পরই রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা।
নদী বন্দর/এসএফ