মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরের বড়লেখা উপজেলার নিমু বিল অভয়াশ্রমের অধিকাংশই প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে মাছ ধরার ব্যাপক পরিমাণ জাল জব্দ করেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম আল ইমরান। এ সময় মাছ লুটেরা বাহিনী নিয়ে পালিয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে উপজেলা মৎস্য বিভাগ।
জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার ইসলামপুর, গোলাপগঞ্জ উপজেলার রাংজিয়ল ও নুরজাহানপুর গ্রামের কতিপয় অসাধু ব্যক্তিরা খাল কেটে ও পাম্প মেশিনে পানি সেচে এ অভয়াশ্রমের লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করেছে।
হাকালুকি হাওরে প্রায় পৌনে ৩শ ছোট-বড় বিল রয়েছে। সবগুলো ইজারা দেয়া হলেও মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার ১৩টি বিলকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে। এরমধ্যে নিমু বিল অন্যতম।
কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র বর্ষায় বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে ও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে খাল কেটে ও পাম্প মেশিন বসিয়ে পানি কমিয়ে এ অভয়াশ্রম থেকে লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করতে থাকেন। সারা রাত মাছ ধরে সকালে বিলের পাড়ে তারা মাছ বিক্রি করেন।
এছাড়া প্রভাবশালী চক্রটি ২১ একর আয়তনের নিমু বিল অভয়াশ্রমের সিংহভাগই দখল করে নিয়েছে। নিজেদের মালিকানাধীন ভূমি দাবি করে শুকিয়ে বোরো ধান চাষ করছেন।
বিল শুকিয়ে মাছ লুটের গোপন সংবাদে শুক্রবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম আল ইমরান পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তাদের নিয়ে সরকার ঘোষিত অভায়শ্রম নিমু বিলে অভিযান চালান। এ সময় মাছ লুটেরা বাহিনী পালিয়ে গেলেও মাছ শিকারের ব্যাপক জাল ও নানা সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া তথ্যে তালিমপুর ইউনিয়ন স্থানীয় মৎস্য সম্প্রসারণ প্রতিনিধি নুর হোসেন মাছ চুরির অভিযোগে গোলাপগঞ্জের নুরজাহানপুর গ্রামের দুলাল আহমদ, বড়লেখার ইসলামপুর গ্রামের রাসেল আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, রুমান আহমদের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ ও দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর বিভিন্ন ধারায় বড়লেখা থানায় মামলা দায়ের করেন।
ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান জানান ‘নিমু বিল’ অভয়াশ্রমটি উপজেলা সদর থেকে বেশ দূরবর্তী ও হাকালুকি হাওরের দূর্গম এলাকায়। সিলেটের গোলাপগঞ্জ হয়ে সেখানে পৌঁছাতে হয়। অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার শেষ রাতে তিনি বিলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সকালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মাছ লুটেরা বাহিনী মাছ ধরার জালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ফেলে পালিয়ে যায়। এগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং তথ্য সংগ্রহ করে মাছ চোরদের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নদী বন্দর / এমকে