একদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা বলে বুলডোজার দিয়ে দোকান ভাঙা হচ্ছে। অন্যদিকে দোকানগুলো বৈধ দাবি করে উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন দোকান মালিকরা। তাদের দাবি, একযুগ আগে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বন্দোবস্ত করে দোকান চালিয়ে আসছেন তারা। দিয়েছেন নিয়মিত ভাড়া। অথচ এখন তাদের অবৈধ বলে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল ১০টা থেকে মেহেরপুর শহরের কোর্ট মোড়ের অবৈধ দোকান উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন। এর প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা সড়ক অবরোধ করেন। তাতেও মেলেনি কোনো সমাধান। অনড় অবস্থানে থাকা প্রশাসন পুলিশের সহায়তায় দোকানগুলো ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।
বেলা ১১টার দিক থেকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু সাইদের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি টিম কোর্ট মসজিদের সামনের দোকানপাট ভাঙা শুরু করে। এসময় দোকান মালিক ও তাদের পরিবারের লোকজন অনুরোধ করে সময় প্রার্থনা করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসকের নির্দেশের কথা অভিযান অব্যাহত রাখা হয়।
এ বিষয়ে দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার আবু সাঈদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওপরের নির্দেশে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ দারা জানান, তাদের কাজ প্রশাসনকে সহায়তা করা। সেই কাজটিই পুলিশ করছে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী বলেন, আজ থেকে ১২ বছর আগে আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বন্দোবস্ত করে এ দোকান চালিয়ে আসছি। নিয়মিত ভাড়াও দিয়েছি। অথচ আজ আমাদের অবৈধ বলে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। কোনোরকম নোটিশ ছাড়াই আমাদের দোকান উচ্ছেদ করেছে। মালামালও সরিয়ে নিতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, বারবার অনুরোধ করেও কোনো সমাধান মেলেনি। অথচ আমরা নিয়মিত জেলা প্রশাসনকে ভাড়া দিয়েছি। এখন এ দোকান ভেঙে দিলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো? ব্যবসা না করতে পারলে তো সংসার চালানো সম্ভব হবে না।
মেহেরপুর হোটেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান বলেন, ১২ বছর ধরে বৈধভাবে ব্যবসা করে আসছে কোর্ট মসজিদ এলাকার সাতজন ব্যবসায়ী। অথচ তাদের পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ উচ্ছেদের প্রতিবাদ জানিয়ে সকালে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে ব্যবসায়ীরা। বিকেলে উচ্ছেদের প্রতিবাদে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে ব্যবসায়ীরা।
তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
নদী বন্দর/এসএফ