খাপড়া নদীর দখল-দূষণ কোন কিছুতেই থামছেনা। ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীটি এখানকার গভীর সমুদ্রে মাছ আহরণকারী হাজার হাজার ফিশিং ট্রলারের দূর্যোগকালীণ নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মাছ আহরণ করে কেনা-বেচা করে এই নদীর মহিপুর ও আলীপুর বন্দরে। স্থানীয়রা এই নদীকে শিববাড়িয়া নদী নামে বেশি চেনেন।
বর্তমানে পলির আস্তরণে নদীটি ক্রমশ ভরাট হয়ে গেছে। ভাঁটার সময় অনেক স্পটে ট্রলারসহ নৌযান চলাচল ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। এছাড়া নদীসহ নদীর তীর দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনার পাশাপাশি একাধিক ইটভাঁটি করা হয়েছে।
সাগর থেকে আন্ধারমানিক নদীর মোহনার সঙ্গে সংযুক্ত এই নদীটির অপর প্রান্ত রাবনাবাদ চ্যানেলের আশাখালী হয়ে কাউয়ার চর দিয়ে মিশেছে। খাপাড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থান করা জেলেরা ট্রলার নিয়ে দুই দিক দিয়ে সাগরে আসা যাওয়া করে। এই নদীর দুই পাড়ে অন্তত ২০টি স্লুইস সংযুক্ত খাল রয়েছে। অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে এ নদীর।
নদীটি পুনঃখননে পানি উন্নয়ন বোর্ড একাধিকবার সমীক্ষা চালিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা আর হয়নি। নদীর দুই পাড়ে এক সময় অসংখ্য ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল ছিল। তা মানুষরূপী বনদস্যুরা উজাড় করে দিয়েছে। এজন্য বনকর্মীদের উদাসীনতাই বেশি দায়ী বলে মনে করছেন সচেতন মানুষ।
দূর্যোগকালীন জেলের আশ্রয়স্থল ছাড়াও এই নদীটি কলাপাড়ার মহিপুর, লতাচাপলী ও ধুৃলাসার ইউনিয়নের কৃষকের কৃষি কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কৃষিজমিতে জমানো পানি অপসারণ কিংবা চাষের জন্য কৃষিকাজের পানি অভ্যন্তরীণ খালে প্রবেশ করানো হয় এই নদী দিয়ে।
গুরুত্বপূর্ণ এই নদীটি আলীপুর, মহিপুর, লক্ষ্মীর বাজার, চাপলী বাজার, আশাখালীর বাজার, মাইটভাঙ্গায় নদীসহ তীর দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা তোলা হয়েছে। এছাড়া নদী তীরের হাট-বাজারের বিভিন্ন ধরণের বর্জ্য এই নদীতে ফেলা হয়। বর্তমানে নদীটি রক্ষায় নদীর সীমানা চিহ্নিত করে দুই পাড়ের স্থাপনা অপসারণে দ্রুত অভিযান চালানো প্রয়োজন রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, নদী দখল-দূষণ রোধে সরকারের অভিযান চলমান রয়েছে।
নদী বন্দর/এমকে