নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল চরমধুয়া ইউনিয়নে নির্মাণাধীন গ্রাম রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে হঠাৎ ওই ইউনিয়নের বীর চরমধুয়া গ্রামের ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে ঈদগাহর জমিসহ ছয় বিঘা জমি মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে বাঁধসংলগ্ন একটি স্কুল, মাদরাসা, ঈদগাহ, মসজিদসহ কয়েক শ পরিবার।
পরে ভাঙনরোধে গতকাল ও আজ বুধবার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শ্রমিকরা সেখানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করছে।
জানা গেছে, প্রায় ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নরসিংদী নদ-নদী পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নে গত বছর ১৭০০ মিটার গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ হাতে নেওয়া হয়। এ প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড বাস্তবায়ন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে নির্মাণাধীন বাঁধের ১০০ মিটারের নিচের অংশের জিও ব্যাগ ও ব্লক সরে গিয়ে বাঁধ ও একটি ঈদগাহর জমিসহ ছয় বিঘা জমি মেঘায় বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধের দেড় শ ফুট দূরত্বে রয়েছে বীর চরমধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বীর চরমধুয়া হাফেজিয়া মাদরাসা, মসজিদ ও ঈদগাহ।
পাশেই বসবাস করছে কয়েক শ পরিবার। ভাঙনের কারণে হুমকিতে রয়েছে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবারগুলো। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে শ্রমিকরা গতকাল ও আজ বুধবার ভাঙন স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকাতে কাজ করতে দেখা গেছে।
বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের ইনচার্জ ও সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড সার্জেন্ট মো. হাফিজ মুঠোফোনে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়া এ ব্যাপারে কিছুই বলতে রাজি নন তিনি।
বীর চরমধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মকবুল হাসান জানান, স্কুলে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। গতকালের ভাঙনে স্কুলটি ঝুঁকিতে আছে। ভাঙনরোধে সেনাবাহিনীর লোকেরা কাজ করছে। বীর চরমধুয়া হাফেজিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল কেফায়াতুল্লাহ জানান, নির্মাণাধীন বাঁধটি থেকে মাদরাসার দূরত্ব মাত্র ৫০ ফুট। ফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে মাদরাসাটি। ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
চরমধুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান শিকদার বলেন, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১৭০০ মিটার বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে জিরো পয়েন্ট থেকে ৫১০ মিটার অংশে গতকাল ১টার দিকে হঠাৎ বাঁধের ভেতর ঢুকে প্রায় ৫ থেকে ৬ বিঘা জমি ভেঙে গেছে। এ ভাঙনের ফলে বাঁধসংলগ্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঈদগাহ ও মসজিদসহ কয়েক শ পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি বলেন, আঁকাবাঁকা নকশার কারণে পুরো প্রকল্পটি ঝুঁকিতে রয়েছে। বাঁধের নকশায় পরিবর্তন আনা অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘ভাঙনরোধে গতকাল থেকে সেখানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ভাঙনের কারণ পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ‘
নদী বন্দর/এসএফ