বিপন্ন প্রজাতির হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে জাতীয় সংরক্ষণ কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা এবং নন ডেট্রিমেন্ট ফাইন্ডিংস তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেছেন, এ কর্মপরিকল্পনা হাঙর ও শাপলাপাতা মাছের আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ, উপকূলীয় সম্প্রদায়কে টেকসই ও উৎপাদনশীল মৎস্য জীবিকা নিশ্চিতে এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রোববার (১৯ জুন) বাংলাদেশের হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রণীত খসড়া জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা এবং নন ডেট্রিমেন্ট ফাইন্ডিংস চূড়ান্তকরণ বিষয়ে হোটেল রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে বন অধিদপ্তর আয়োজিত জাতীয় পরামর্শক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের অর্থায়নে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির কারিগরি সহায়তায় প্রণীত এ কর্মপরিকল্পনা সরকারি সংস্থা, স্থানীয় সম্প্রদায়, এনজিও, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি উদ্যোগের জন্য নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের সমুদ্রে বিদ্যমান একশটিরও বেশি প্রজাতির হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ বিলুপ্ত হওয়ার হুমকির সম্মুখীন। আমাদের উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের সুস্থ পরিবেশ টিকিয়ে রাখতে এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ । হাঙর ও শাপলাপাতা মাছকে চিরতরে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে অতিরিক্ত পরিমাণে ধরা বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যেন সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র এবং জীববৈচিত্র্য আমাদের জীবন-জীবিকা ও জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

তিনি বলেন, এক হাজার ৭৩৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া ও এক হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সেন্ট মার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া নামক দুটি ঘোষিত সামুদ্রিক রক্ষিত এলাকা হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। হাঙর ও শাপলাপাতা মাছের যেসব প্রজাতি বিলুপ্তির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো আমাদের বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এ কঠোরভাবে সুরক্ষিত। সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় এসব প্রজাতি সংরক্ষণে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ সম্পর্কিত গবেষণা, নীতি প্রণয়ন ও এদের গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সমর্থন পেয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক ও সুফল প্রকল্পের পরিচালক গোবিন্দ রায় প্রমুখ। ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির সিনিয়র ম্যানেজার মেরিন এলিজাবেথ ফারনি মনসুর কিনোট পেপার উপস্থাপন করেন।

নদী বন্দর/এসএফ