ভারত সরকারের ঋণরেখার অধীনে খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের একটি অংশ রূপসা সেতুর নির্মাণকাজ গত ২৫ জুন শেষ হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, ভারতীয় ‘ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন (ইপিসি)’ ঠিকাদার মেসার্স এলঅ্যান্ডটি ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ব্রডগেজ সিঙ্গেল-ট্র্যাক’ রূপসা রেল সেতু নির্মাণ করেছে। এটি খুলনাকে মোংলা বন্দর শহরের সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত করেছে।
সেতুটি উত্তাল রূপসা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে।
প্রকৌশলগত দিক থেকে এটি একটি অনন্য কীর্তি। কারণ এটির পাইলিংয়ের জন্য ‘বেস গ্রাউটিং’ নামে একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ভায়াডাক্ট সেকশনে ৮৫৬টি পাইল ফাউন্ডেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭২টি পাইল ফাউন্ডেশন স্টিল ব্রিক সেকশনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলোর গড় পাইল দৈর্ঘ্য ৭২ মিটার। নদীতে নৌচলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেতুটিতে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে।
যেমন ‘নেভিগেশন ফেন্ডার পাইল’, যা ‘পায়ারের’ নিচের দিকে। মূল সেতুর ‘নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স স্ট্যান্ডার্ড’ ‘হাই-ওয়াটার লেভেল’ থেকে ১৮ মিটারেরও বেশি। স্টিলের তৈরি এই সুপারস্ট্রাকচার সেতুটির নির্মাণসামগ্রী ভারত থেকে সড়ক, সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নদীপথে আমদানি করা হয়েছিল।
রূপসা রেলওয়ে সেতু এবং খুলনা-মংলা বন্দর রেললাইনটি পণ্য পরিবহনে ব্যাপক সুবিধা দেবে। মোংলা বন্দরের সঙ্গে এই সহজ ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ অনায়াসেই স্থানীয় বাজারগুলোতে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশিষ্ট স্থানগুলোতে পর্যটনকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারকে ৭ দশমিক ৮৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চারটি ঋণরেখা দিয়েছে। এই ঋণরেখার অধীনে এখন পর্যন্ত ৪২টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ১৪টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকিগুলো বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। ২০২২ সালের মার্চে ভারতের অর্থবছর শেষের হিসাবে এই ঋণরেখার অধীনে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। গত ৩০ জুন বাংলাদেশের অর্থবছরের শেষের হিসাবে এটি ১১৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাবে।
নদী বন্দর/এসএফ