ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। তারা জানিয়েছে, নগরীটিতে আরো বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার থেকে মুম্বাইয়ের বেশ কিছু অংশ কোমরসমান পানিতে তলিয়ে আছে, এতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। বছরের এ সময়ে মুম্বাইয়ে মৌসুমি বৃষ্টিপাত সাধারণ ঘটনা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও অনিয়ন্ত্রিত নগর উন্নয়নের কারণে বৃষ্টির তীব্রতা আরো বেড়েছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কম অনুমানযোগ্য হয়ে উঠেছে বলে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
প্রতিদিন কাজের সন্ধানে হাজার হাজার লোক মুম্বাই এসে হাজির হয়। তাদের থাকার ব্যবস্হা করতে ব্যাপক নির্মাণযজ্ঞও চলতে থাকে, যেগুলোতে প্রায়ই নিয়মকানুন মানা হয় না আর সেগুলো ঠিকমতো তদারকিও করা হয় না। অনেক এলাকার পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্হা বেশ পুরোনো, যে কারণেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে গত কয়েক দশক ধরে মুম্বাই শহরের আশপাশের জলাভূমি জুড়ে বিস্তৃত ম্যানগ্রোভ বন গড়ে তোলা হয়েছে যা বন্যার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক বাধা হিসেবে কাজ করছে। বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের নগর কর্তৃপক্ষ ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে এমন দিনগুলোতে লোকজনের সৈকতে যাওয়া নিষিদ্ধ করছে।
জলাবদ্ধতার কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে এবং লোকজনকে তলিয়ে যাওয়া রাস্তাগুলোর নোংরা পানি ভেঙে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। বহু এলাকা তলিয়ে থাকায় শহরটির পরিবহন ব্যবস্হার মেরুদণ্ড বাস সার্ভিস ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে অনেক মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনগুলোতে আটকা পড়ে থাকছেন। টানা ভারী বৃষ্টিতে মুম্বাইয়ের আশপাশের জেলাগুলোর জনজীবনও ব্যাহত হচ্ছে।
চিপলুন শহরে ভূমিধসের ঘটনা ঘটার পর মুম্বাই ও গোয়ার মধ্যবর্তী জাতীয় মহাসড়কের একটি অংশ বন্ধ হয়ে গেছে, যানবাহনগুলোকে অন্য রাস্তা দিয়ে গন্তব্যে পাঠানো হচ্ছে। টানা ভারী বৃষ্টির কারণে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালা ও উত্তরাঞ্চলীয় হিমালয় রাজ্য হিমাচল প্রদেশের কিছু অংশেও বন্যা সতর্কতা জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।
নদী বন্দর/এমকে