নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল শ্রীনগরে ফের মেঘনার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কবরস্থান, এতিমখানা, মাদ্রাসা ও ঈদগাহ মাঠ। রবিবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই ভাঙন চলে। এতে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে কয়েকশ বসতবাড়ি।
স্থানীয়রা জানান, রাত ১০টার দিকে মেঘনার তীরঘেঁষা শ্রীনগরের ফকিরের চর গ্রামে নদীভাঙন শুরু হয়। এতে গ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কবরস্থান, ঈদগাহ মাঠ, এতিমখানা ও মাদ্রাসা মাঠের গাছপালাসহ বেশির ভাগ অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রতি বছরই নদীভাঙনে ফকিরের চর গ্রামের মানচিত্র পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় গ্রামটির অস্তিত্ব টিকে থাকা নিয়ে সংশয়ে স্থানীয়রা।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৩০ বছরে দফায় দফায় নদীভাঙনে স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, হাটবাজারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং কয়েক শ বিঘা ফসলি জমি, বসতভিটা মেঘনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করা হলে মানচিত্র থেকে এ মাদ্রাসা ও কবরস্থানসহ গ্রামের নাম মুছে যাবে।
নদীভাঙনের কথা শুনে দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোরশেদ খান রাসেল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মোতালিব, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মামুন মিয়া প্রমুখ।
ইউপি সদস্য মো. জালাল উদ্দীন বলেন, মেঘনা নদীভাঙনের করাল গ্রাস থেকে বসতবাড়ি, ফসলি জমি রক্ষা করতে ৩০ বছর যাবত বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দাবি করে আসছে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। গ্রামটি রক্ষার জন্য দ্রুত বাঁধ চাই।
মাদ্রাসার মোহতামিম কাদির মোল্লা বলেন, ২০০০ সালে গ্রামবাসীর সহায়তায় কবরস্হানের পাশে প্রতিষ্ঠিত মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া এতিমখানা মাদ্রাসাটি প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ জমি ইতিপূর্বে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ মোরশেদ খান রাসেল বলেন, এখানকার নদীভাঙনের তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা না হলে পুরো গ্রামটি বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর বলেন, খবর পেয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।
নদী বন্দর/এসএফ