1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
খোলপেটুয়ার বাঁধ ভেঙে ভেসে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম - Nadibandar.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০২২
  • ৯৯ বার পঠিত

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দুর্গাবাটি এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ভাঙা বাঁধ দুই দিনেও মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ফলে নতুন করে আরও ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১০ গ্রামের প্রায় চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। 

অন্যদিকে রাস্তা উপচে পানি নতুন নতুন জায়গা প্লাবিত করছে। ভেসে গেছে ৫০টির মত ছোট বড় কাঁকড়ার প্রকল্প, তলিয়ে গেছে ৫ শতাধিক চিংড়ি ঘের। পানি উঠেছে ঘরবাড়িতেও। ভেঙে পড়েছে কিছু কাঁচা ঘর। পানি ওঠায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে টয়লেট, টিউবওয়েল। এরই মধ্যে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) রাত ১২টার দিকে প্রবল জোয়ারের চাপে পশ্চিম দুর্গাবাটির প্রায় দেড়শ ফুট বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।  শনিবার (১৬ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ সংস্কার সম্ভব হয়নি। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যেমন বাড়ছে, তেমনি সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে উপকূলের মানুষ।

শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাবাটি গ্রামের প্লাবন বিশ্বাস জানান, ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলার প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের অধিকাংশ বেড়িবাঁধ লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ভেসে যায় হাজার হাজরে ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের। ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়। এরপর থেকে অনেক প্রকল্প এসেছে। বাঁধ সংস্কার হয়েছে। তবুও দুর্গাবাটি কৃষ্ণমন্দির ও সাইক্লোন শেল্টারের পাশে দুর্গামন্দির এলাকার বাঁধ প্রতি বছর ভেঙে যাচ্ছে। 

গত বছর তিন বার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইলা পরবর্তী প্রতি বছর বাঁধ ভাঙলেও কোনো বারই বাড়িতে জল ঢোকেনি। বৃহস্পতিবারের বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তার ঘরের মধ্যে হাঁটু সমান জল উঠেছে। ১০ বিঘার কাঁকড়ার প্রকল্প ও ১৬ বিঘার মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে তার ২০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। 

একইভাবে পরিতোষ মণ্ডল বলেন, তার ৩৫ বিঘার চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। বাকীতে মাছের রেনু কেনা হয়। এই ক্ষতি সামাল দিয়ে মহাজনের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবেন তা তিনি জানেন না। তবে ভাঙন কবলিত এলাকার পাশে থাকায় তিনি, সুশান্ত রপ্তান ও প্লাবন বিশ্বাস বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দুর্গাবাটির বিভিন্ন অংশে কোটি কোটি টাকার কাজ করা হলেও ভেঙে যাওয়া অংশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাটির কোনো কাজ করা হয়নি। এছাড়া প্রভাবশালীরা পাশের নদী থেকে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করায় চর দেবে গেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেউ তদারকি করেননি। 

শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তবে দুপুরের জোয়ারে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। 

তিনি অভিযোগ করেন পাশের খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধভাবে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করায় চর দেবে যেয়ে পার্শ্ববর্তী অংশের বাঁধে ভাঙন লেগেছে। 

শ্যামনগরের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন জানান, শনিবার দুপুরের ভাটিতেও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি মেরামত করা যায়নি। এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি সংস্কারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের জানান, বস্তা, দড়ি, বাঁশ ও পেরেকসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। প্রায় ৬০০ ফুট এলাকায় পাইলিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে তীব্র জোয়ারের কারণে কাজ করা যাচ্ছে না।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ভাঙনকবলিত বাঁধ মেরামতের চেষ্টা চলছে। সাময়িক সংস্কারের পর স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে দ্রুত কাজ শুরু হবে। বর্তমানে দুর্যোগ কবলিত মানুষের সুপেয় খাবার পানির সংকট নিরসনে ভ্রাম্যমাণ রিভার্স অসমোসিস প্ল্যান্ট চালু করা হয়েছে। এছাড়া পানিবন্দি পরিবারকে জরুরি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। 

নদী বন্দর/এসএফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com