শুরু হলো বাঙালির শোকের মাস আগস্ট। সদ্য স্বাধীন দেশে, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করে ঘাতকরা। ক্ষত-বিক্ষত হয় সংবিধান। আবারো পাকিস্তানি ভাবধারায় উল্টোপথে যাত্রা। যুদ্ধজয়ী জাতিকে হাজার বছর পিছিয়ে দিতেই ইতিহাসের নৃশংসতম এই হত্যাকাণ্ড।
পাকিস্তানি অত্যাচার নির্যাতনে ঘোর অমানিশা। আলোর দিশারি হয়ে এলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নেতৃত্বের যাদুর কাঠিতে বাংলাদেশের জন্ম। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। অর্থনীতিকে শক্ত ভিত দিতে দিনরাত পরিশ্রম করছিলেন বঙ্গবন্ধু।
শুরু হলো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। এর ডালপালা মেলে রাজনীতির মাঠে, ক্যান্টনমেন্টে। ১৫ আগস্ট রক্তাক্ত হলো ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, রক্তাক্ত হলো বাংলাদেশ। খুঁজে খুঁজে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাইকেই হত্যা করে ঘাতকরা।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানীর নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোন জঘন্য কাজ করতে পারে।
ভারত বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ শ্রী চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে।টাইমস অব লন্ডন এর ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয় ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাঁকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই।
একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকান্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।’
প্রতিবারের মত এবারও ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে আগস্টের প্রথম দিন থেকেই শুরু হবে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর মাসব্যাপি কর্মসূচি। এর আগে কর্মসূচি চুড়ান্ত করেছে দলটি।
নদী বন্দর/এসএস