1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
শিক্ষক ও লেখক হিসাবে তিনি আজও অনন্য উচ্চতায় - Nadibandar.com
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০২২
  • ৮৮ বার পঠিত

হুমায়ুন আজাদ নিজেকে শিক্ষকতার পেশায় এতোটাই নিবেদিত প্রাণ ছিলেন যে, মানুষ আজো তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।  এই মহৎ পেশাটি তাকে অনন্য উচ্চতা দিয়েছিলো। 

তার কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক হিসেবে। ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ১৯৭২ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলা বিভাগে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। বলা যায়, তার শিক্ষকতার জীবন ছিলো বর্ণাঢ্য।

হুমায়ুন আজাদ অধ্যাপনা ছাড়াও একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, সমালোচক, রাজনীতিক ভাষ্যকার, কিশোরসাহিত্যিক ও গবেষক ছিলেন। তিনি ভাষাবিজ্ঞানী। পিএইচডি ডিগ্রীর জন্য হুমায়ুন আজাদ বাংলা ভাষার বাক্যতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেন।  এর মাধ্যমে বাংলার ভাষাবিষয়ক গবেষণায় আধুনিক ভাষাবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সূত্রপাত করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি বাংলা ভাষার বাক্যতত্ত্বের ওপর ‘বাক্যতত্ত্ব’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। একই সালে তিনি ‘বাঙলা ভাষা’ শিরোনামে দুই খণ্ডের একটি দালিলিক সঙ্কলন প্রকাশ করেন। এই তিনটি গ্রন্থ বাংলা ভাষাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসাবে বিবেচিত হয়।  পরবর্তী কালে তুলনামূলক-ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান ও অর্থবিজ্ঞানের উপর দু`টি সংক্ষিপ্ত প্রাথমিক পাঠ্যপুস্তক লেখেন।

ধর্ম, মৌলবাদ, নারীবাদ, রাজনৈতিক সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০’র দশক থেকে পাঠকদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলেন তিনি। এজন্য তাকে প্রথাবিরোধী লেখক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

এই লেখকের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে মৃত্যুবরণ করে তিনি। ২০০৪ সালের ১১ আগস্ট রাতে জার্মানিতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর পর তার মরদেহ কফিনে করে জার্মানি থেকে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে মুন্সীগঞ্জের রাড়িখালে তাকে সমাহিত করা হয়।

২০০৪ সালে তার ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে মৌলবাদী গোষ্ঠি তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়।  আর তারই জের ধরে ওই বছর ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে একদল সন্ত্রাসী হুমায়ুন আজাদকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। প্রথমে তিনি দেশের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা লাভ করেন। পরে সরকারিভাবে থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়। তিনি সেখান থেকে অনেকটা সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন।  ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের উপর কাজ করার জন্য জার্মান সরকারের নিকট একটি বৃত্তির আবেদন করেছিলেন। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট সেই বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত সেখানেই কাটে তার।

তার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে তার নানাবাড়ি কামারগাঁওয়ে। জন্ম নাম ছিলো হুমায়ুন কবীর।  ১৯৮৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি বর্তমান নাম ধারণ করেন।  বাবা আবদুর রাশেদ শিক্ষক, মা জোবেদা খাতুন গৃহিণী ছিলেন।  ছেলেবেলায় প্রায় ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত রাড়িখালের প্রাকৃতিক পরিবেশেই তিনি বেড়ে ওঠেন।

ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ুন আজাদ বিয়ে করেন ১৯৭৫ সালে।  স্ত্রী লতিফা কোহিনুর । তার দুই কন্যা মৌলি আজাদ, স্মিতা আজাদ এবং এক পুত্র অনন্য আজাদ।  ১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্যে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। 

তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়ে।  কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১০, উপন্যাস ১৩টি, সমালোচনা গ্রন্থ ২২টি, কিশোরসাহিত্য ৮টি, ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ সংখ্যা ৭টি। মূলত তিনি প্রবন্ধ ও গবেষণামূলক গ্রন্থের জন্যই বেশি আলোচিত। 

নদী বন্দর/এআরকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com