পূর্ণিমা ও বায়ুচাপের তারতম্যের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ আশঙ্কায় শনিবারও দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় ৪ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে আজকের (শনিবার) মধ্যে বঙ্গোপসাগরে আরও একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১১ আগস্ট উড়িষ্যা উপকূলের অদূরবর্তী উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। পরে এটি স্থল নিম্নচাপ হিসেবে বৃষ্টি ঝরিয়ে ভারতীয় এলাকায় নিঃশেষ হয়ে যায়। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি হয়।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সমুদ্র বন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে। এসব এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
শনিবারের মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এর প্রভাবে হয়তো দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি আবার বাড়তে পারে।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ ছিল বৃষ্টিহীন। এ সময়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কিছুটা বৃষ্টি ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে শ্রীমঙ্গলে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এ সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী তিনদিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলাসিয়াস ছিল রাজশাহীতে। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে, ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নদী বন্দর/এআরকে