ডলার সংকট এবং ভারতে চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চাল আমদানি করে অনেকটা লোকসানে পড়েছেন আমদানিকারকরা। লোকসানের আশঙ্কায় বন্দর থেকে চাল খালাস করছেন না ব্যবসায়ীরা। এ কারণে দিনাজপুরের হিলি পানামা পোর্টের ভেতর চালভর্তি শতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে। লোকসান এড়াতে ব্যাংক মার্জিন কমানের পাশাপাশি আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৯ মাস চাল আমদানি বন্ধের পর চলতি বছরের ২৩ জুলাই থেকে আমদানি শুরু করে সরকার। এর আগে মন্ত্রণালয়ের আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) না থাকায় গত বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে হিলি দিয়ে সব ধরনের চাল আমদানি বন্ধ ছিল।
ভারতে চালের দামবৃদ্ধি এবং ডলার সংকটের কারণে শুরুর দিকে চাল আমদানি কিছুটা কম থাকলেও এখন অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে প্রায় ২০ থেকে ২৫ ট্রাক চাল বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। গেল মাসের ২৩ জুলাই থেকে সোমবার (১৫ আগস্ট) পর্যন্ত ১৯২ ট্রাকে সাত হাজার ৭১৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। এতে সাত কোটির বেশি রাজস্ব পেয়েছে সরকার।
এদিকে, হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আটাশ জাতের চাল কেজিতে চার টাকা বেড়ে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট কেজিতে চার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকায়। অন্যদিকে স্বর্ণা-৫ জাতের চালও কেজিতে দুই টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
আমদানিকারক শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, আমরা ভারত থেকে চাল আমদানিতে যে দর নিয়ে এলসি খুলেছিলাম এখন চাল অনেক বেশি দামে আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে আমাদের অনেক বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে। বর্তমানে ব্যাংকের মার্জিন শতভাগ এবং ডলারের মূল্যও বেড়েছে। সে কারণে আমাদের আমদানি চালগুলো খালাস করতে পারছি না।
ব্যবসায়ী লোকমান হাকিম বলেন, আমাদের দেশে চালের দাম কমানোর জন্যই ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে এর উল্টো হচ্ছে। ভারতীয় আমদানি করা চাল শুল্ক দিয়ে প্রায় ৫৮ টাকা পড়ে যাচ্ছে, সেখানে দেশের চাল ৫৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আগে এলসির চাল খালাসে ব্যাংকের মার্জিন শতভাগ ছিল না। চাল খালাসের পর ব্যাংককে পরিশোধ করা হতো কিন্তু এখন আগেই শতভাগ পরিশোধ করতে হচ্ছে। তাছাড়া বিশ্ববাজারে ডলার সংকটের কারণে দেশে এর প্রভাব পড়ছে।
হিলি আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, সরকারের কাছে অনুরোধ করবো চালের ওপর যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সেটি মওকুফ করে দিলে আমদানি আরও বাড়বে। এতে করে বাজারে চালের দামে অনেকটা প্রভাব পড়বে।
হিলি পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, বন্দরে ভারত থেকে আমদানি হওয়া শতাধিক ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় আটকে আছে। খালাসের জন্য বন্দরের পক্ষ থেকে সব প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত খালাস করে ভোক্তাদের মধ্যে সরবরাহ করতে পারে সেদিকে কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।
নদী বন্দর/এসএইচ