বিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রত্যক্ষ সহায়তা ও চাষিদের আগ্রহ সৃষ্টির মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাল্টা চাষের নীরব বিপ্লব ঘটেছে। এবার উপজেলার ৬০টি বাগান ও কৃষকদের পতিত জমিতে লাগানো গাছে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাল্টা চাষিদের লাভ দেখে অন্য কৃষকরাও মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিকছন চন্দ্র পাল প্রায় ৫ বছর আগে উপজেলার কৃষকদের উচ্চ মূল্যের ফল-ফসল আবাদে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। এলাকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় তিনি কৃষকদের মাল্টা বাগান তৈরির প্রতি উৎসাহিত করেন। একইসঙ্গে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে মাল্টা চারা ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে কয়েক বছরের মধ্যে চাষীদের মাঝে প্রায় ৩০টি মাল্টা বাগান তৈরি করে দেওয়া হয়। তাদের সাফল্য দেখে ব্যক্তি উদ্যোগে চাষিরা আরও ৩০টি বাগান তৈরি করেছেন। এছাড়া পতিত জমি ও বাড়ির ছাদে অনেকে মাল্টা চাষ করেছেন।
কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, ৫ বছর আগে উপজেলায় মাল্টার কোনো চাষ না হলেও বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৬০ বিঘা জমির ওপর ৬০টি মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে।
উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের পটুয়াকোল গ্রামের নূর ইসলাম মিঠু জানান, কৃষি বিভাগের আহবানে সাড়া দিয়ে তিনি ৪ বছর আগে ২৫০টি মাল্টা গাছ রোপণ করেন। দু’বছর পর ফল ধরতে শুরু করে এবং বর্তমানে প্রতিটি গাছে গড়ে ৬০-৭০ কেজি হারে মাল্টা ধরেছে। অন্যান্য বাগানেও এবার মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগান থেকে বিভিন্ন এলাকার ফল ব্যবসায়ীরা ৩ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে মাল্টা কিনে নিয়ে যান।
মিঠু আরও জানান, পরিচর্যা খরচ বাদে মাল্টা বাগান থেকে তিনি এবার ১০/১২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
এলাকায় মাল্টা চাষের স্বপ্নদ্রষ্টা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিকছন চন্দ্র পাল জানান, বিরামপুর উপজেলায় তার হাতেই মাল্টা চাষের সূচনা হয়েছে। বর্তমানে চাষিরা ব্যাপক হারে মাল্টার চাষ করছেন। এলাকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার মাল্টা অধিক সুস্বাদু এবং আকারেও বড় হচ্ছে। চাষিদের অধিক লাভ ও সাফল্য দেখে কৃষকরা নতুন নতুন বাগান তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষকদের সার্বিক সহায়তার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
নদী বন্দর/এসএইচ