চলচ্চিত্র মুক্তির জন্য ছাড়পত্র দানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড যেন অহেতুক কিছু না করে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ভারতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সিনেমা শিল্প, সেখানেও সেন্সর বোর্ড আছে। প্রতিটি রাজ্যে ছবি মুক্তির জন্য সেন্সর বোর্ড আছে। আমাদেরও এটা থাকতে হবে। যারা বলে থাকার দরকার নেই তারা বুঝে নাকি না বুঝে বলে সেটি আমার প্রশ্ন। পৃথিবীর সব জায়গায় এটা আছে।
ড. হাছান বলেন, দেশে নির্মিত কোনো সিনেমা যদি আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় এবং সেটা যদি প্রকৃত ঘটনাকে উপস্থাপন না করে সত্য ঘটনা অবলম্বনে হয়, যদি পুরো সত্য ঘটনা না আসে তাহলে তো সেন্সর বোর্ড প্রশ্ন রাখবেই। বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের জন্মের পর থেকে সেন্সর বোর্ড ছিলো। সেন্সর বোর্ড থাকতে হবে।
তবে বোর্ডের সেসব বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ আছে বা প্রশ্ন উঠেছে সেগুলোর দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলচ্চিত্র শিল্পী, চিত্রগ্রাহক, সম্পাদক, পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক সমিতিগুলোর সভাপতি, সম্পাদক ও নেতাদের সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা জানান।
ন্যূনতম এক কোটি টাকা ছাড়া কোনো সিনেমা নির্মাণ করা যায় না বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভালো সিনেমা বানাতে মিনিমাম দুই কোটি টাকা লাগে। এক কোটি টাকার নিচে কোনো সিনেমা হয় না। বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদানের পরামর্শ ছিল নির্মাতা সংশ্লিষ্টদের। আমরা বাণিজ্যিক ছবিতে জোর দিয়েছি। আর্ট ফিল্মেও অনুদান দিচ্ছি। ডকুমেন্টারিতেও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে বেশি জোর দিয়েছি, সেটার সুফলও পাচ্ছি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আশার কথা হলো চলচ্চিত্র শিল্প এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে। আমরা অনুদানের পরিমাণ দ্বিগুণ করেছি। আগে যেখানে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হতো এখন দেওয়া হয় ২০ কোটি। আমি যখন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা আমার কাছে আসেন। তারা আমাকে বলেন, অনুদানের ছবিগুলোও অনেক হলে মুক্তি পায় না। আর্ট ফিল্মের জন্য অনুদান দেওয়া হলেও সেগুলো নির্মাণ হয় না।
তিনি বলেন, যেসব ছবি বানানো হয়নি সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাণিজ্যিক অনেক ছবিও হলে রিলিজ দেওয়া হয়নি, কাউকে স্বত্ব বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা নতুন নীতিমালা করেছি, কমপক্ষে ১০টি হলে ছবি মুক্তি দিতে হবে, পরে সেটি বাড়িয়ে ২০টি করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদান বাড়ানোর ওপর আমরা জোর দিয়েছি, সেটার সুফলও পাচ্ছি। ৬৫টি হল বেড়ে ২১০টি হয়েছে। আগামী এক বছরে আরও ১০০টি বাড়বে।
ড. হাছান বলেন, যখন ইন্ডাস্ট্রি বড় হবে, আবার এক হাজার সিনেমা হল হবে তখন হয়তো ভিন্ন পরিস্থিতি দাঁড়াবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু আর্ট ফিল্মে অনুদান দেবো আর মেইনস্ট্রিমে দেবো না তা নয়। অনুদান তো সব ধরনের সিনেমার জন্য। এর মধ্যে মূলধারা তো হচ্ছে বাণিজ্যিক ছবি, এটা সবাইকে স্বীকার করতে হবে। যারা চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে নির্মাণ করেননি তাদের সবার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। প্রথমে নোটিশ দেওয়া হয়, এরপর যখন কমপ্লাই করে না তখন মামলা করা হয়। এটার প্রেক্ষিতে অনেকে টাকা ফেরত দিয়েছে এবং দিচ্ছে।
নদী বন্দর/এসএইচ