রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘আংশিক সেনা সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ঘিরে বুধবার তিনি এ ঘোষণা দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম রাশিয়া এ ধরনের সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে।
এই আংশিক সেনা সমাবেশে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে। যুদ্ধের ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে আরও সেনা পাঠাতে চান তিনি। এ লক্ষ্যেই সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের একটি অংশকে ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। খবর এএফপি ও বিবিসির।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাশিয়ার এ সেনা সমাবেশকে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ইউক্রেনে রাশিয়ার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিরাট অঞ্চলে মস্কো অনুগত নেতাদের ডাকা গণভোটের প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন জানালেন পুতিন।
ওই গণভোট ডাকার পরদিনই তিনি রিজার্ভ সেনাদের ডাকার নির্দেশ দিলেন। এ নিয়ে গতকাল বুধবার পুতিন জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেন।
পশ্চিমাদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে পুতিন বলেন, পশ্চিমারা যদি ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ অব্যাহত রাখে, তাহলে মস্কো তার হাতে থাকা অস্ত্রের বিশাল মজুতের শক্তি দিয়েই জবাব দেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমাদের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, আমাদের জনগণকে রক্ষায় সামর্থ্যে থাকা সব উপায় প্রয়োগ করব। এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয়।’
ভাষণে পুতিন বলেছেন, তিনি রিজার্ভ বাহিনীর আংশিক সমাবেশ করার নির্দেশ দিয়ে একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন আর তা বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।
পুতিনের এ নির্দেশের পরপরই সামরিক বাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রিজার্ভ বাহিনীর তিন লাখ সদস্যকে ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন।
সেনা সমাবেশ কী
সেনা সমাবেশের অর্থ সৈন্যদের একত্র করা এবং সক্রিয় সেবার জন্য প্রস্তুত করা। আংশিক সেনা সমাবেশের অর্থ রিজার্ভে থাকা মোট সৈন্যের কিছু অংশকে ডেকে নেওয়া।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেন, আংশিক সেনা সমাবেশের অংশ হিসেবে তিন লাখ রিজার্ভ সেনাকে ডাকা হবে। অতীতের সামরিক অভিজ্ঞতা আছে, এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে। তবে শিক্ষার্থীদের এ জন্য ডাকা হবে না।
পুতিনের এই আংশিক সেনা সমাবেশের ঘটনা ইউক্রেন সংঘাতকে লক্ষণীয়ভাবে বাড়িয়ে দেবে। এমন সময় এ ঘোষণা দেওয়া হলো, যখন ইউক্রেনের পাল্টাহামলা ঠেকাতে লড়ছে রাশিয়ার বাহিনী। হামলার মুখে রুশ বাহিনী পিছু হটতে এবং দখল করা কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
নদী বন্দর/এসএইচ