পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে তীর্থযাত্রীদের নৌকা ডুবির ঘটনায় নতুন করে এক শিশুসহ আরও সাতজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শেখ মাহবুব ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার ২৫ জনের লাশ উদ্ধারের পর রাতে নদীতে তল্লাশি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় নতুন করে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। রাজশাহী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম থেকে আসা ডুবুরি দলও এখন অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
সকালে করতোয়া এবং পাশের দিনাজপুরের আত্রাই নদীর বিভিন্ন স্থানে মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।
উদ্ধার মরদেহগুলোর নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। স্বজনদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী এখনও ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।
নিহতরা হলেন- দীপংকর (৩), প্রিয়ন্ত (২.৫), শ্রেয়সী (৩), তনুশ্রী (৫), প্রিয়ন্তী (৫), উশশী (৩), শ্যামলী (১৪), লক্ষী রানী (২৫), শোভা রানী (২৭), খুকি রানি (৩৫), প্রমিলা রানি (৫৫), তারা রানি (২০), শোনেকা রানী (৬০), ফাল্গুনি রানি (৫৫), প্রমিলা (৭০), ধনোবালা (৪৭), সুমিত্রা রানী (৫৭), সফলতা রানী (৪০), শ্যামলী বালা (৩৬), অমল চন্দ্র (৩৫), বিলাস চন্দ্র (৫০), হাসান আলী (৭০) মাঝি-ইজারাদার। এ ছাড়া বাকি মরদেহগুলো তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মহালয়া উপলক্ষে পাঁচপীর, বোদা, মাড়েয়া, ব্যাঙহারি এসব এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। এ কারণে মাঝ নদীতে পৌঁছানোর পর যাত্রীর চাপে নৌকা ডুবে যায়। এ সময় কিছু মানুষ সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও বেশির ভাগ যাত্রীই ডুবে যান।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার তুষার কান্তি রায় বলেন, “সোমবার সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের করতোয়া, দিনাজপুরের খানসামার আত্রাই নদীতে মরদেহ ভেসে ওঠে। পরে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে আমাদের জানালে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “ভোর ৬টা থেকে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহীর তিনটি ডুবুরি ইউনিট উদ্ধার কাজ করছে। ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে। অতীত অভিজ্ঞতা ও নদীর প্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে, ভুক্তভোগীদের কেউ দুর্ঘটনাস্থলে নেই। তারপরও প্রত্যেক ভুক্তভোগীকে উদ্ধারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
নদী বন্দর/এসএইচ