বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি দ্রুত বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া এফটিএ চুক্তি সই করার অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদারের আহ্বানও জানান তিনি।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ম্যানিলায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সদরদপ্তরে বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে মালয়েশিয়ার উপ-অর্থমন্ত্রী/প্রতিনিধিদের দ্বিপাক্ষিক সভায় এ অনুরোধ জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির সব সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত করার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ অবশ্যই কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি আরও অধিক পরিমাণে জনশক্তি রপ্তানি করতে মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়া থেকে এলএনজি আমদানির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরেও আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং আশা করি এটি দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে আরও বাণিজ্যিক/অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার পথ প্রশস্ত করবে।
এ সময় প্রয়োজন অনুপাতে এলএনজি আমদানির বিষয়ে তিনি মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়া আমাদের এফডিআই’র জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস দেশ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানত টেলিকম খাতে মালয়েশিয়া থেকে এফডিআই স্টক দাঁড়িয়েছে ৭৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধার দিক থেকে বাংলাদেশ এফডিআই’র জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।
তিনি মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশে অধিক বিনিয়োগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করতে আগ্রহী। এটি যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয় সে বিষয়ে তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
মালয়েশিয়ার উপ-অর্থমন্ত্রী ইব ডাতো ইন্দার মোহা শর আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়া দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ), আরও অধিক পরিমাণে এলএনজি আমদানি ও জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এসময় তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে রাইজিং স্টার হিসেবে অবিহিত করেন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার এই সম্পর্ক দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে।
পাশাপাশি এক অনির্ধারিত বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ভূটানের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভূটানের দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন।
২০২০-২১ অর্থবছরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৩০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মালয়েশিয়া থেকে আমদানি ছিল ১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে। গত বছর বাংলাদেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের অর্ধ মিলিয়ন (৫,৫৯,২০০) ডোজ প্রদান করায় অর্থমন্ত্রী মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
নদী বন্দর/এসএইচ