পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ডলফিন থাকলে জলের প্রতিবেশ ভালো থাকে এবং মাছের বংশবৃদ্ধির পরিমাণ বেড়ে যায়, তাই ডলফিন সংরক্ষণে সরকার নিরলস ও আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ডলফিন সংরক্ষণে সরকার ডলফিন অ্যাকশন প্ল্যান প্রস্তুত করেছে এবং নয়টি ডলফিন অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছে। এ লক্ষ্যে সুন্দরবন এলাকায় সাতটি ডলফিন কনজারভেশন দল গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বনকর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সুফল প্রকল্পের আওতায় ডলফিন সংরক্ষণ প্রোগ্রাম বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। দেশের নদী ও জলজ প্রতিবেশ ভালো রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডলফিন রক্ষা করতে হবে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) ‘শুশুক ডলফিন রক্ষা করি, জলজ প্রতিবেশ ভালো রাখি’ প্রতিপাদ্যে ‘আন্তর্জাতিক মিঠাপানির ডলফিন দিবস-২০২২’ উপলক্ষে বন অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু ও আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রাকিবুল আমিন।
বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা করেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ডলফিন হত্যারোধে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এ তিমি বা ডলফিন হত্যার জন্য সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। এ আইনের প্রয়োগ করা হচ্ছে। ডলফিন সংরক্ষণের জন্য বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড এলাকার এক হাজার ৭৩৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। ডলফিন সংরক্ষণে জনগণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ডলফিন মেলা আয়োজনসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ এবং কমিউনিটিভিত্তিক ডলফিন সম্পর্কিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
বনমন্ত্রী বলেন, সরকারের কার্যক্রমের ফলে সুন্দরবনে ডলফিনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সুন্দরবনের তিনটি অভয়ারণ্য- ঢাংমারী, দুধমুখী ও চাঁদপাইয়ে এ বৃদ্ধির হার ৫৫ শতাংশ, যা দেশের ডলফিন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, মিঠাপানির ডলফিন সংরক্ষণের কাজ শুধু সরকার, বন বিভাগ বা কোনো সংস্থার একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই সবার প্রতি আমাদের দেশের ডলফিন রক্ষার অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।
নদী বন্দর/এসএইচ