কার্তিক মাসে লালমনিরহাটে আমন ধান ঘরে তোলার ধুম চলছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে যখন নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে তখনই আগাম ধান কৃষকের মুখে মঙ্গা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। ধান ঘরে তুলতে পেরে খুশি চাষিরা। ধানের ভালো ফলন ও দাম পেয়ে অনেকটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠছেন তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও সমান তালে কাজ করছেন। কেউ ধান কাটছেন আবার কেউ ধান বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউবা জমিতে ও বাড়ির উঠোনে ধান মাড়াই করছেন।
জানা যায়, চলতি মাসেই লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। ধানের দাম ভালো থাকায় চাষিদের মনও উৎফুল্ল।
অপরদিকে মজুরি বেশি থাকায় কৃষি শ্রমিকরা রয়েছেন চাঙা। ধান কাটা ও মাড়াই করতে কৃষি শ্রমিক পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দিন হাজিরায় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
কৃষি অফিস জানায়, চলতি আমন মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের আট জেলায় ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে উৎপাদন ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার ৯৬৩ টন চাল। এর মধ্যে আগাম জাতসহ হাইব্রিড চাষ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে যা মোট আবাদি জমির ৪৩ শতাংশ।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে। ধানের দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি।
কৃষকরা জানান, এবার সারের মূল্য বৃদ্ধি ও সংকটের মধ্যেও ধান চাষ করেছি। গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করতে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লেগেছে। এবার প্রায় তিন গুণ বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে তবুও শ্রমিক সংকট। বর্তমানে ধানের দাম তুলনামূলক ভালো।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকির পাড়া ইউনিয়নের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘তিন বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। আগাম ধান পেয়ে এ কার্তিক মাসে মঙ্গা দূর হয়েছে।’
পাটগ্রাম উপজেলার জগতবের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলাউদ্দিন সুমন বলেন, ‘পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ধানের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রচুর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। ধানের আশানুরূপ ফলন হয়েছে। এদিকে প্রতিকুল আবহাওয়ার মধ্যেও তেমন ক্ষতি হয়নি। এই কার্তিক মাসে আগাম ধান পেয়ে কৃষকরাও খুশি।
নদী বন্দর/এসএইচ