শীতের মৌসুম শুরু হতে এখনও অনেক দিন বাকি। এরই মাঝে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে হেমন্তের শিশির বিন্দুতে মাঠঘাটের ঘাস ও গাছপালার রঙও এখন ধূসর প্রায়। শীতের আগমনী বার্তায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সোনারাঙা রোদ।
দেশের উত্তরে হিমালয়ের কোলঘেঁষা ঠাকুরগাঁও জেলায় সাতসকালে বয়ে আসা হিমেল হাওয়া আর শিশির ভেজা ভোর প্রকৃতিতে জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে। সন্ধ্যার আগেই প্রকৃতিতে ভর করছে কুয়াশা। নেমে আসছে শীতের আমেজ।
কার্তিকের শুরু থেকেই এমন শীতের আবহ দেখা গেছে। এখানে ক্রমেই কমছে বাতাসের আর্দ্রতা আর বাড়ছে হিমেল হাওয়ার ঠাণ্ডা পরশ। বর্তমানে দিনের বেলায় কিছুটা গরম অনুভব হলেও সন্ধ্যা থেকেই শীত অনুভূত হচ্ছে। রাত যত গভীর হয় শীতও ততো বাড়তে থাকে। আর শীতের কারণে শরীরে মোটা কাথা বা কম্বল মুড়িয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন সকল বয়সের মানুষ।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে সকাল ৮টা-৯টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে রাস্তাঘাট, ফসলের মাঠসহ চার দিক। এ কারণে রাস্তায় চলাচলকারী মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলা গরম থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং হওয়ার পরদিন থেকে জেলায় বেড়েছে শীত ও কুয়াশা। তাই অন্যবারের চেয়ে এবার শীতের প্রকোপ বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
সদর উপজেলার আলী আক্কাছ নামের এক যুবক জানান, “গতবারের চেয়ে এবার আরও আগে শীত শুরু হয়ে গেছে। বিকাল থেকেই শুরু হয় কুয়াশা ও হিমেল হাওয়া।”
এবার গতবারের তুলনায় শীতের তীব্রতা বেশি হতে পারে উল্লেখ করে শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, যদিও আশ্বিনের শুরু থেকে এলাকায় শীত বাড়তে থাকে তবে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং হওয়ার পরদিন থেকেই সন্ধ্যা থেকে সকাল ৮টা-৯টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ও শীতের প্রকোপ বেড়েছে। আর সকাল ১০-১১ টার সময়েও মাঠের ঘাস ও ধান গাছের ডগা শিশিরে ভেজা থাকছে।
আব্দুল আলী নামে এক ত্রি-হুইলার চালক জানান, রাতে ঘন কুয়াশায় ঠিকমত রাস্তা দেখা না যাওয়ায় এখনই পথে চলতে সমস্যা হচ্ছে।
মোটরসাইকেল আরোহী ইমরান হোসেন বলেন, এমনিতে সন্ধ্যায় বাইরে হাঁটাচলা করলে গরম কাপড় গায়ে দিয়ে বের হতে হচ্ছে। আর মোটরসাইকেল চালাতে তো গায়ে জ্যাকেট, মাফলার ও হাত মুজা পরিধান না করলে হাড় কাপানো ঠাণ্ডায় হাত-পা অনুভূতিহীন হয়ে পড়ে।
জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান জানান, শীতবস্ত্রের জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ৫০ হাজার কম্বল ও ২০ লাখ টাকার একটি চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে শতভাগ সঠিকভাবে বিতরণ করা হবে আশ্বাস জেলা প্রশাসকের।
শীত মোকাবেলায় যথা সময়ে সরকার বিশেষ উদ্যোগ করবে এবং অসহায় দরিদ্র পরিবারের লোকজন তীব্র শীতের ছোঁবল থেকে রক্ষা পাবে- এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
নদী বন্দর/এসএইচ