আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পাকিস্তানিরাও যেই সাহস করেনি সেটাই করেছে জিয়াউর রহমান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে জিয়া না চাইলে খুনিরা এতো সাহস পেতো না। জিয়াই ১৫ আগস্টের খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন, খুনিদের বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়েছেন। খুন আর হত্যার রাজনীতিতে বিএনপির হাত রক্তে রঞ্জিত।
তারা বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জাতির পিতাকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা কম করেনি। ’
কাদের বলেন, ‘ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে তারা যতই মুছে ফেলতে চেয়েছে, ততই তারা নিজেরা মুছে গেছে এবং সংকুচিত হয়েছে। ১৫ আগস্টের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন জিয়া। তিনি খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করেছিলেন খুনি মোশতাকের সঙ্গে মিলে। আর জিয়াউর রহমানের দুর্নীতিবাজ পুত্র তারেক রহমানই হলেন ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড। ’
আজ শনিবার বেলা ১২ টার দিকে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রথম আনুষ্ঠানিক ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে এদিন সকাল ১১ টায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে ওই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
সম্মেলনে কতো লোক হয়েছে তার খবর নিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেবের কী খবর? শুয়ে আছেন টাকার বস্তার ওপর। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কত লোক হয়েছে, আসেন এবং দেখে যান। এটা বিভাগীয় কোনো সমাবেশ না, শুধু মহানগর ইউনিট। আপনাদের মতো ভাড়া করা লোক নেই এখানে। ’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সম্মেলনে কতজন লোক হয়েছে তা আমরা দেখেছি। রংপুরে একটা সমাবেশ হয়েছে। কত রঙ্গ দেখাইলা রে জাদু। রং-বেরঙের নাটক। তিন দিন আগে রংপুর এসে সবাই শুয়ে ছিল। বরিশালে এখন একটা সমাবেশ হচ্ছে। ফখরুল সাহেবরা চারদিন আগে সেখানে গিয়ে শুয়ে আছেন। বাড়ির ছাদের ওপর, গুদামঘরে শুয়ে আছে। ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের মাস, বিজয়ের মাস। এই মাস আওয়ামী লীগের। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিজয়ী হয়েছি, ইনশাআল্লাহ এই ডিসেম্বরেও আমাদেরই বিজয় হবে। ডিসেম্বরে বিএনপির রঙিন খোয়াব কর্পূরের মতো উড়ে যাবে। আগামী নির্বাচনে আমরাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ের স্বর্ণ দুয়ারে পৌঁছাব। ’
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘খেলা হবে, খেলা হবে, আন্দোলনে, নির্বাচনে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, ভুয়া ভোটারদের বানানোর বিরুদ্ধে খেলা হবে। টাকা ওড়ে মহল্লায়, টাকার খেলা হবে না। সাম্প্রদায়িক, খুনির সরকারের হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও নিরাপদ নয়।
বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আবারও ভোট চুরি করবে, খুন করবে। গণতন্ত্র হরণ করবে এই বিএনপি। বিএনপির সাথে জনগণ নেই। যতই নাচানাচি করেন, লাফালাফি করেন, দুবাই থেকে টাকা আসে। খোঁজ পেয়েছি। ব্যবস্থা হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে, তারা যত চেঁচামেচিই করুক, যত সমাবেশ করুক, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ হারাতে পারবে না। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাবু সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো.আব্দুর সবুরসহ প্রমুখ।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটি মেয়র আরফানুল হক রিফাত। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের অনেক নেতারা সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
নদী বন্দর/এসএম