সিরাজগঞ্জে যমুনায় জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। পানির প্রবাহ ক্ষীণ। এ সুযোগে চরাঞ্চলের কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষাবাদে। বালুতেই ফলাচ্ছেন সোনার ফসল।
কিছুদিন আগেও থৈ থৈ পানিতে নিমজ্জিত ছিল চরগুলো। যমুনার ভাঙনে উজার হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। বসতভিটা হারিয়ে চর ছেড়ে মূল ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছেন শত শত মানুষ। তবে শীতের শুরুতে পানি কমে শুকিয়ে এসেছে চরের মাঠঘাট। একরের পর একর জমিতে এখন সবুজের হাতছানি। মাঠে মাঠে কৃষকের ব্যস্ততা।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, ভুট্টা, মরিচ, বাদাম, ধান, গম, মিষ্টি আলু, সবজি, ডাল ও কুমড়াসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
কথা হয় চরাঞ্চলের ফুলজোর গ্রামের মো. মাহবুবের সঙ্গে। তিনি জানান, তিনি পাঁচ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ভুট্টা ও দুই বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। এতে লাভের আশা করছেন কৃষক মাহবুব।
তেকানী চরাঞ্চলের কৃষক আবু তালেব ও আব্দুল মজিদ বলেন, এক যুগ আগেও এ চরে কোনো ফসল চাষ করা যেতো না। ফলে শুষ্ক মৌসুমেও পতিত থাকতো এসব জমি। এখানে শুধু কাশবন বেড়ে উঠতো। সেই কাশবনই ছিল আমাদের আয়ের একমাত্র উৎস। এখন আমরা শুষ্ক মৌসুমেই দুই বার ফসল ঘরে তুলি।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ী, তেকানী, চরগিরিশ, মনসুর নগর, নিশ্চিন্তপুর, শুভগাছা ও মাইজবাড়ী ইউনিয়নে গত পাঁচ বছরে প্রায় দুই হাজার কৃষককে বিভিন্ন চাষাবাদের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে পাঁচ হাজার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজসহ কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, কৃষি বিভাগের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেয়ে যমুনার চরাঞ্চলের কৃষকরা এখন ভালো ফলন পাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামিনুর ইসলাম জানান, এ বছর চরাঞ্চলে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হবে। তালিকাভুক্ত কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।
নদী বন্দর/এসএইচ