দেশে চার লেন বিশিষ্ট দ্বিতীয় ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ হতে যাচ্ছে চাঁদপুরের মতলব উত্তরে। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে চাঁদপুরের সঙ্গে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর ওপর এই সেতু নির্মাণের জন্য এরই মধ্যে সমীক্ষা কাজ শেষ হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে সরকারের সেতু কর্তৃপক্ষ, বিদেশি পরামর্শক, সচিব এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী সেতু নির্মাণের স্থান মতলব উত্তরের কালিপুরা ও মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় স্থানীয়রা তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
সেতু নির্মাণ বিষয়ক স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে জেলা শহর চাঁদপুরের সঙ্গে ঢাকার ৫২ কিলোমিটারের দূরত্ব কমে যাবে। শুধু তাই নয় চাঁদপুরের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ আর কুমিল্লা হয়ে ঘুরে ঢাকা যেতে হবে না। তারা মতলবের মধ্য দিয়ে দ্রুত ঢাকা যেতে পারবে। একই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। নির্মাণ হবে শিল্প-কারখানা।
তিনি আরো বলেন, যোগাযোগ হচ্ছে যেকোনো রাষ্ট্রের উন্নয়নের পূর্বশর্ত। তাই এ সরকার যোগাযোগ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। সেই গুরুত্ব থেকেই সরকার মতলব-গজারিয়া সেতু নির্মাণের কাজের প্রতি গুরুত্ব অনুধাবন করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কালিপুর পাম্প হাউজ মাঠে মতবিনিময় সভায় সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ভিখারুদৌলাহ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এবং সচিব মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-২ নির্বাচনী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল ও পরিকল্পনা কমিশনের সচিব ও সদস্য সত্যজিৎ কর্মকার, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মুজিবুর রহমান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুস, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মুন্সি, আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান চৌধুরী ভুলন, চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাস্বেবক লীগের সহ-সভাপতি রহমত উল্যাহ চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সেতু প্রকল্প পরিচালক লিয়াকত আলী। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরামর্শক সংস্থা টিপসা প্রতিনিধি কার্লোস প্রেশ।
প্রায় দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারলেনের ঝুলন্তু এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে তিন হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব খাতের টাকা দিয়ে আগামী তিন বছরের মধ্যে এই সেতু নির্মাণ করা হবে। সেতুর কোনো পিলার না থাকায় নদীর নাব্যতা রক্ষা পাবে। সেতু কর্তৃপক্ষ জানান, নড়াইলের কালনা সেতুর মতোই চার লেন বিশিষ্ট এই সেতু নির্মাণের ফলে পাল্টে যাবে এলাকার উন্নয়ন চিত্র।
নদী বন্দর/এসএইচ