দুর্দান্ত বোলিং করেছেন সাকিব আল হাসান। তারকা অলরাউন্ডারকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন এবাদত হোসাইন। দু’জনের বোলিং তাণ্ডবে খোলস ছেড়ে বের হতে পারেনি ভারত। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সফরকারী দলকে ১৮৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ।
জবাব দিতে নেমে স্বস্তিতে থাকতে পারেনি লিটন বাহিনীও। শুরুতেই উইকেট খোয়ানো বাংলাদেশ ১৩৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে হারের শঙ্কায় পড়ে স্বাগতিক দল। তবে মেহেদী মিরাজের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ১ উইকেটের জয় ছিনিয়ে রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।
রোববার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হারা ভারতের শুরুটাও ভালো হয়নি। দলীয় ৪৯ রানেই প্রথম সারির তিন ব্যাটারকে হারায় সফরকারীরা। সে ধাক্কা সামাল দিতে পারেনি মিডল অর্ডার, লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা। বাকিদের ব্যর্থতার বিপরীতে ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল লোকেশ রাহুল।
পাঁচ নম্বরে নেমে অর্ধশতকের দেখা পান তিনি। রাহুলের ৭০ বলে ৫ চার এবং ৪ ছয়ের মারে ৭৩ রানের ইনিংসে ভর করেই ৪১.২ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ১৮৬ রান জড়ো করতে পারেন ভারত।
টাইগারদের হয়ে ৩৬ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেন সাকিব। ৪৭ রান দেয়া এবাদতের শিকার ৪ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেন করতে নামা নাজমুল হোসাইন শান্ত (০)। শুরুর ধাক্কা সামলে বিজয়কে নিয়ে ২৬ রান যোগ করতেই বাংলাদেশ ইনিংসে আঘাত হানেন মোহাম্মদ সিরাজ। ২৯ বলে দুটি চারে ১৪ রানেই সাজঘরের পথ ধরেন তিনে নামা এনামুল হক বিজয়।
অর্থাৎ ২৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। এ অবস্থায় অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি গড়ে সেই চাপ ভালোই সামাল দিচ্ছিলেন লিটন দাস। যোগ করেন ৬১ বলে ৪৮ রান। তবে প্রথম ক্যাপ্টেন্সির ম্যাচে নিজের ইনিংসকে ৪১ রানের বেশি টেনে নিতে পারেননি এই ব্যাটার।
আর লিটন ফিরতেই ছন্দ হারান ২৯ রান করা সাকিবও। ভারতের জোড়া আঘাতে বিপর্যস্ত টাইগার শিবির তখনও নির্ভার ছিল দুই ভায়রার ওপর। তবে দিনটা যে আজ তাদের ছিলো না- তা বুঝিয়ে দিলেন ভারতের দুই পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ও শার্দুল ঠাকুর।
পরপর দুই বলে বাংলাদেশ দলের দুই অভিজ্ঞ কাণ্ডারিকে তুলে নিয়ে ম্যাচের লাগাম রোহিতের হাতে এনে দেন এই দুই পেসার। যাতে ১২৮ রানেই ৬ উইকেট খুইয়ে বসে স্বাগতিকরা। এরপরও জয়ের সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশ দলের। কারণ, ওই সময়ও জয়ের জন্য ৮৯ বলে দরকার ছিলো ৫৯ রান। হাতে ছিল আফিফ-মিরাজসহ ৪টি উইকেট।
কিন্তু ৩৯ ও ৪০তম ওভারে যা হলো- তাতেই শেষ হয়ে যায় সবকিছু। মাত্র ৮ বলের ব্যবধানে ২ রান যোগ না হতেই পতন হয় ৩টি উইকেট। আফিফ (৬), হাসান মাহমুদ (০) ও এবাদত (০) আউট হলেন কিন্তু বুঝে ওঠার আগেই। যার ফলে ১৩৬ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে কেবল পরাজয়ের প্রহর গুণতে থাকে বাংলাদেশ।
কারণ, জয়! সে তো নাগালের অর্ধশত রানেরও বেশি (৫১ রান) দূরে। তবে মুস্তাফিজ এসেই চার মেরে এবং পরের ওভারে দুটি ছক্কা হাঁকিয়েই যেন দর্শকদের তটস্থ করে দেন মিরাজ।
যার ফলে ৫৪ বলে লক্ষ্য নেমে আসে ৩৩ রানে। এ অবস্থায় মিরাজ একাই দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে চেষ্টা করেন বাউণ্ডারি বের করার এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর। তাকে আর আটকাতে পারেনি ভারতীয়রা। ফলে মুস্তাফিজকে সঙ্গী করে একার হাতেই শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে নিলেন মেহেদী মিরাজ।
শেষ উইকেট জুটিতে এদিন রেকর্ড গড়েন এই দুজন। ৩৯ বলে তুলে নেন প্রয়োজনীয় ৫১ রান। অলরাউন্ড তারকা শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৩৯ বলে ৩৮ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলে। তার অনন্য এই ইনিংসে ছিল চারটি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কার মার।
নদী বন্দর/এসএইচ