তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘১০ লাখ মানুষের তোড়জোড় করে ৫০ হাজার লোকের সমাবেশ করেছে বিএনপি।’
রোববার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যে মাঠে তারা (বিএনপি) সমাবেশ করেছে, সেই মাঠে গরুর হাট বসে। তারা সেই মাঠই পছন্দ করেছেন। তাদের আরও অনেক বিকল্প বড় মাঠের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তাদের গরুর বাজারের মাঠই পছন্দ।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যে মাঠে সমাবেশ করেছে, সেটার আয়োতন ৫০ হাজার বর্গফুট। একজন মানুষ দাঁড়াতে তিন বর্গফুট এলাকা লাগে। ফলে সেই মাঠে কত মানুষ ধরে সেটা সহজে অনুমেয়। বাইরের রাস্তা মিলিয়ে ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ হয়েছে। আমাদের থানা সম্মেলনেও এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়।’
বিএনপির সাতজন এমপি সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে কিছুই হবে না জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) সর্বমোট সাতজন সংসদ সদস্য আছেন। তারা বলেছিলেন সরকারের পদত্যাগ দাবি করবেন। ১০ তারিখে সরকার হটিয়ে দেবেন। এখন নিজেরা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয় যে, তারা আসলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে চান। এ পদত্যাগে সংসদ কিংবা সরকারের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং ক্ষতি হবে বিএনপির।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নিতে দিয়ে বিএনপির যেমন ক্ষতি হয়েছে, এ পদত্যাগেও বিএনপির ক্ষতি হবে। ওই সাতজন সদস্য পদত্যাগ করলে সংসদের কিছু হবে না। নিয়মানুযায়ী সেখানে উপ-নির্বাচন হবে।’
২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচি প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিল ডাকা এটি দুরভিসন্ধিমূলক। ওদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল। সেদিন সারাদেশে সমাবেশ ডাকা আমি মনে করে এটি দুরভিসন্ধিমূলক।’
বিদেশি কিছু শক্তি দেশে অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে- এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশিদের নানা ধরনের বক্তৃতা-বিবৃতি। বিএনপি তো বিদেশিদের কাছে গিয়ে বারবার ধরনা দেয়। আবার বিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। তার প্রেক্ষিতে মাঝে মাঝে ছোট-খাটো বিবৃতি প্রকাশ পায়।’
‘প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের উত্তরকে বিবৃতি বলে চালিয়ে দেওয়া এটি সঠিক নয়। এগুলো আসলে দেশবিরোধী অপতৎপরতার অংশ। তবে কূটনীতিকদের অবশ্যই জেনেভা কনভেনশনের নিয়ম-নীতি মেনে চলা উচিত। একইসঙ্গে দেশের রাজনীতিবিদদের নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক মতপার্থক্য, প্রতিযোগিতা এসব বিষয় অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া অনুচিত’ বলেও উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
এ মুহূর্তে সরকার কোনো চাপে আছে কি না, জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের কোনো চাপ নেই। আমরা সবসময় জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। সুতরাং জনগণ যদি চাপ না দেয়, তাহলে আমাদের কোনো চাপ নেই। কোনো বিদেশি শক্তি আমাদেরকে এদেশের ক্ষমতায় বসায়নি। কোনো বিদেশি শক্তি এদেশের ক্ষমতার পালাবদল করতেও পারে না। জনগণই এদেশের ক্ষমতার মালিক। আমরা জনগণের শক্তিতেই বলিয়ান।’
বিএনপি নির্বাচনে না গেলে সরকার কী করবে- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন এক বছর পরে। সেই বিষয়ে বলার সময় এখনো আসেনি। তবে বিএনপি যে নিজের কথায় ঠিক থাকে না, সেটি প্রমাণ হয়েছে। নয়াপল্টনের বাইরে যাবে না তারা। এটা নিয়ে তো অনেক কথা বলেছিল। শেষপর্যন্ত তারা গোলাপবাগ মাঠে বা গরুর হাটের মাঠে গিয়েছে। সুতরাং বিএনপি যেটাই বলুক নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর যদি তারা নির্বাচন বর্জন করেন, এটি তাদের জন্য আত্মহনন বলে গণ্য হবে।’
নদী বন্দর/এসএইচ