ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১৪ বছর ধরে গায়ের জোরে দেশ শাসন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পর প্রথম যারা ক্ষমতায় ছিল তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নষ্ট করেছে। সবার অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল। রক্ষীবাহিনী গঠন করে ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। সেই আওয়ামী লীগ ১৪ বছর ধরে গায়ের জোরে দেশ শাসন করছে। ২০১৪ সালে বিনাভোটে সংসদ গঠন করেছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতেই ডাকাতি করেছে। আবারও একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করছে তারা।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরেও আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। অথচ গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পাকিস্তানি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম।
তিনি বলেন, বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আইনজীবী, সাংবাদিক রাজনীতিবিদ সবাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করেছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বানোয়াট মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করেছে। এ সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। তাদের অর্থপাচার এত বেশি যে দেশের অর্থনীতি এখন ধ্বংসের কিনারে। আজ যারা গণতন্ত্র, অর্থনীতি, সুবিচার নষ্ট করেছে তাদের দেশের জনগণ আর দেখতে চান না। সুতরাং সবার দায়িত্ব হচ্ছে এই স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। তা না হলে কারও রেহাই নেই।
বিএনপির এ নেতা বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশ কীভাবে পরিচালিত হবে সেই রূপরেখা আমরা ঘোষণা করবো। আসুন সবাই বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রতিষ্ঠার শপথ নেই।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, বিএনপির অফিসে নারকীয় অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু তাতে সমাবেশে জনস্রোত আটকানো যায়নি। এ অত্যাচার-নির্যাতনের কারণ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম সরকার বন্ধ করে দিতে চায়। কিন্তু ইতিহাস বলে এ সংগ্রাম রুখে দিতে পারেনি কেউ।
তিনি বলেন, এ দেশে গণতন্ত্র হরণকারী সরকারকে মেনে নেওয়া হবে না, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। একদলীয় শাসন এদেশের মানুষ কখনো মানেনি, মানবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় বক্তব্য দেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুল ইসলাম খান আলিম প্রমুখ।
নদী বন্দর/এসএইচ