নওগাঁর বাজারে বাড়তে শুরু করেছে ধানের দাম। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিমণ ধানে বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা।
শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁয় আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষ। এখন নিজেদের প্রয়োজনে কৃষকরা ধান বাজারে বিক্রি করছেন। তবে, ধানের দামে চাষিরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও দ্রব্যমূল্য, সার ও তেলের দাম বাড়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন তারা।
জেলার রানীনগর উপজেলায় মঙ্গল ও শনিবার হাট বসে। গত মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) হাটে স্বর্ণা-৫ জাতের ধানের দাম ৫০ টাকা বেড়ে প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ১১৭০ থেকে ১১৯০ টাকা। এছাড়া ৪৯ জাতের ধান ৮০ টাকা বেড়ে ১৩০০ থেকে ১৩৩০ টাকা, পাইজাম ১৩৮০ থেকে ১৪৫০ টাকা এবং কাটারিভোগ ১৬৬০ থেকে ১৬৮০ টাকা দামে প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে।
ধানের দামে খুশি হলেও চাষিদের অভিযোগ, বাজারে ধানের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যায়। কিন্তু কৃষকদের ঘরে ধানের পরিমাণ কমে গেলে দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কম-বেশি করেন। তারা ধানের দাম পেলেও চাষিদের ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
উপজেলার ত্রিমোহনী গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, আমরা বাজারে ধান নিয়ে আসলে কোনো হাটে দাম বেশি হয় আবার কোনো হাটে কম। তবে ব্যবসায়ীরা ঠিকই ব্যবসা করেন। মাঝখানে কৃষকরা দাম থেকে বঞ্চিত হন। ধান উৎপাদন করতে গিয়ে খরচ বেড়েছে। দাম বেশি থাকলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।
সদর উপজেলার চুনিয়াগাড়ী গ্রামের কৃষক করিম উদ্দিন মণ্ডল বলেন, সবকিছুর দামই ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে ধানের দাম পেয়ে আমরা খুশি। যদি এই দাম থাকে বা এর চেয়ে একটু বেশি হয় তাহলে কৃষকদের জন্য সুবিধা হয়। আগামীতে হয়তো ধানের দাম আরও বাড়বে।
ক্ষুদ্র ধান ব্যবসায়ী রায়হান আলী বলেন, শুরুতে ধানের দাম বেশি ছিল। মাঝখানে কিছুটা দাম কমে আবারও বাজার বাড়তে শুরু করেছে। প্রকারভেদে প্রতিমণ ধানে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে। এখানে প্রতি হাটে ১২০০ থেকে ১৫০০ মণ ধান বেচাকেনা হয়। যার জোগান দেন আশপাশের চাষিরা। এ হাটে বেশির ভাগ ধান কেনেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও চালকল মালিকরা। আর বাকিটা কেনেন জেলার বাইরের ব্যবসায়ীরা।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, আমন মৌসুমে ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। টাকার প্রয়োজনে কৃষকদের যতটুকু ধান বিক্রি করার দরকার ঠিক ততটুকুই বিক্রি করছেন। এ কারণে বাজারে ধানের সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে।
তবে আগামীতে ধানের দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
নদী বন্দর/এসএইচ