ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে আঘাত হেনেছে সাত মাত্রার প্রবল শক্তিশালী ভূমিকম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ৬ মিনিটে দেশটিতে আঘাত হানে এ ভূকম্পন। এর প্রভাব এতটাই শক্তিশালী ছিল যে প্রতিবেশী দেশ ফিলিপাইনেও সেটি অনুভূত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ভূমিকম্পটিতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার প্রথমে সুনামি সতর্কতা জারি করলেও কিছুক্ষণ পরেই তা প্রত্যাহার করে নেয়। ইন্দোনেশিয়ার ভূপ্রকৃতিবিদ্যা সংস্থাও জানিয়েছে, এতে সুনামির আশঙ্কা নেই।
ইন্দোনেশীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মেলোনগুয়ান শহর থেকে ১৪১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৪ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম ভূমিকম্পের পর অন্তত ১০টি আফটার শক অনুভূত হয়েছে বলেও জানিয়েছে ভূপ্রকৃতিবিদ্যা সংস্থা।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্প আঘাত হানার পরপরই আশপাশের শহরগুলোর বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন।
ইকা নামে মেলোনগুয়ানের এক বাসিন্দা টেলিফোনে জানান, ভূমিকম্পে তাদের পুরো বাড়ি কাঁপছিল।
উত্তর সুলাওয়েসির পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
পার্শ্ববর্তী মালুকু দ্বীপ এবং দেশটির দক্ষিণাংশের কিছু এলাকাতেও ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে। এসব এলাকায় ঝুঁকি ও আফটারশকের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তথাকথিত ‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার’র ওপর অবস্থিত হওয়ায় ইন্দোনেশিয়া খুবই ভূমিকম্পনপ্রবণ একটি দেশ। মাত্র দুদিন আগেই উত্তর সুমাত্রায় আঘাত হেনেছিল ছয় মাত্রার ভূমিকম্প। আবার গত সপ্তাহে তানিম্বার দ্বীপে আঘাত হেনেছিল ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প।
গত বছরের ২১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সিয়ানজুরে আঘাত হানে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূকম্পন। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানায় এতে প্রাণ হারান অন্তত ২৭১ জন। আহত হন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।
২০১৮ সালের পর থেকে ইন্দোনেশিয়ায় এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প। ওই বছর পালু শহরে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার প্রলয়ংকরী এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, যার জেরে সুনামি ও ভয়াবহ ভূমিধস দেখা দেয়। সেদিন প্রাণ হারান চার হাজারের বেশি মানুষ।
২০০৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার পাডাং এলাকায় ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
নদী বন্দর/এসএস