‘ভেরি গুড অফিসার’ এবং ‘তুখোড় ছেলে’ হিসেবে কূটনীতিক তৌহিদুল ইসলামের প্রশংসা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একটি দল তৌহিদুলের বিপক্ষে ‘লেগেছে’ বলেও মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী। তবে তিনি আরও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি যতদিন (মন্ত্রী হিসেবে) আছেন, ততদিন তিনি তৌহিদুলকে ডিফেন্ড (আগলে রাখা) করে যাবেন।
শনিবার সিলেটে সুরমা নদীর চর খনন কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন প্রতিক্রিয়া জানান মন্ত্রী। সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের চাঁনপুর খেয়াঘাট এলাকায় এই কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।
জানা গেছে, গত বছরের জুলাই থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভিয়েনা মিশনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পদ শূন্য। এই পদে কূটনীতিক তৌহিদুল ইসলামকে রাখতে চায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাকে নিয়োগ দিয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা ভিয়েনায় পাঠানো হয়। কিন্তু অস্ট্রিয়া সরকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে তৌহিদুল ইসলামকে গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। পরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন অস্ট্রিয়া সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে একটি চিঠি লিখেন। তিনি তৌহিদুলকে গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান। কিন্তু তারপরও ভিয়েনা থেকে তৌহিদুলকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি।
তৌহিদুল ইসলাম যখন ইতালির মিলানে কনসাল জেনারেল হিসেবে কর্মরত ছিলেন, তখন তার বিরুদ্ধে অধস্থন এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই তাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভিয়েনা গ্রহণ করছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তৌহিদুলকে গ্রহণ না করায় অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদটি আপাতত খালিই থাকছে। তৌহিদুল বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করছেন।
আজ সিলেটে তৌহিদুল ইসলামকে নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সে (তৌহিদুল) আমাদের অ্যাম্বাসেডার ইন সিঙ্গাপুর। তাকে আমরা ভিয়েনাতে দিতে চাই। সেখানে যেয়ে মাল্টিন্যাচারাল কাজ আছে আমাদের ধারণা।’
মোমেন বলেন, ‘সে যখন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পরীক্ষা দেয়, তখন সারা বাংলাদেশের মধ্যে সে প্রথম হয়। তারপরে সে তার ব্যাচের ফার্স্টবয় ছিল। অত্যন্ত ভালো, তুখোড় ছেলে। এখন ওরে টেনে কিভাবে নামানো যায়, তার জন্য তার মন্ত্রণালয়ের লোকজন, তারই বন্ধু-বান্ধবরা কন্টিনিউয়াসলি….’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ চারটা বড় বড়, ইউএনওতে চারটা বড় রিকগনিশন নেয়। একটা হচ্ছে শান্তি ও সংস্কৃতি। আর দুটো বড়, একটা হচ্ছে অটিজমের ওপর একটি এবং আরেকটি হচ্ছে মানুষের ক্ষমতায়ন। এই দুটোতে এই ছেলে (তৌহিদুল) প্রথম কাউন্সেলর ছিল ইউএনওতে এবং সে অসম্ভব তুখোড় ছেলে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তার (তৌহিদুল) শত্রু আছে। শত্রু ওখানে গিয়ে, সে যখন মিলানে কনসাল জেনারেল ছিল, কনসাল জেনারেল থাকা অবস্থায় কোনো একটা মেয়েকে তার পেছনে লাগিয়ে দেয়। লাগিয়ে দিয়ে একটা কেলেংকারির চেষ্টা করে। তখন তাকে উহ্য করা হয়, সাসপেন্ড করা হয়, অনেক ইনভেস্টিগেশন করা হয়, সরকারের অনেক টাকা, আপনাদের টাকা খরচ করা হয়। পরে দেখা যায় এক্কেরে বানোয়াট। তারপর তার প্রমোশন হয়, তারপর অ্যাম্বাসেডার হয়। এখন তার বিরুদ্ধে আবার লাগছে একদল, তারই বন্ধু-বান্ধব হবে। আর না হয় পত্রিকায় এগুলো গেল কিভাবে? হি ইজ অ্যা ভেরি গুড অফিসার। আমি যদ্দিন আছি, আই উইল ডিফেন্ড হিম।’