কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে সূর্যমুখী চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সার, কীটনাশক ও ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকদের মুখে হতাশার ছাপ থাকলেও দর্শনার্থীদের সমাগম চোখে পড়ার মতো। সূর্যমুখী ফুলের বাগানের মনোরম দৃশ্য দেখতে এবং ছবি তুলতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৩৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কৃষকদের দেওয়া পরামর্শগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন হলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সরেজমিনে জানা যায়, সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের মহিষের চর গ্রামে ১২ একর জমিতে বারি-২ জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবারের সূর্যমুখী চাষে ব্যয় একটু বেশি। প্রতিদিন জমিতে পানি দিতে হচ্ছে। ডিজেল, সার ও কীটনাশকের দাম বেশি। কয়েকদিন আগে বাগান নিয়ে হতাশ ছিলাম। সূযমুখী ফুল ফুটবে কি না! এখন ফুলের গঠন ভালো হচ্ছে। আশা করছি লাভবান হবো।’
তিনি বলেন, ‘সূর্যমুখী চাষ করে এ বছর একটু অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছি। তবে ব্যাংকগুলো ঋণের ব্যাপারে সহনশীল হলে খুব উপকার হতো। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছে।’
সূর্যমুখী ফুলের চাষ দেখতে আসা মো. ইয়াকুব আলী বলেন, ‘সূর্যমুখী চাষ দেখে খুবই ভালো লাগলো। শুনলাম সূর্যমুখী চাষ নাকি লাভজনক। আমার ইচ্ছা আছে, আগামীতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করবো।’
মো. সুরুজ আলী বলেন, ‘আমি ঘোগাদহে আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছি। সূর্যমুখী বাগানের কথা শুনে দেখতে এলাম। দেখে খুব ভালো লাগলো। পরে বন্ধু-বান্ধবসহ সূর্যমুখী বাগান দেখার জন্য আসবো।’
মহিষের চর গ্রামের মো. ইমরান আলী বলেন, ‘আমাদের এই চরে আগে কখনো সূর্যমুখীর চাষ দেখিনি। এ বছর প্রথম আমাদের এলাকায় সূর্যমুখী চাষ হচ্ছে। দেখে ভালো লাগছে।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘৩৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। কৃষকদের মাঝে সার ও বীজসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে যদি তেল উৎপাদনের ব্যবস্থা করা যেত, তাহলে আরও বেশি লাভ করতে পারতেন চাষিরা। তারপরও আশা করছি, কৃষকরা সূর্যমুখী চাষে লাভবান হবেন।’
নদী বন্দর/এসএইচ