1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বেতাগী শহর রক্ষা বাঁধে ফাটল, আতঙ্কের মধ্যে এলাকাবাসী - Nadibandar.com
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৭ মে, ২০২৩
  • ৭২ বার পঠিত

বরগুনার বেতাগী শহরের মূল রক্ষা বাঁধের প্রধান সড়কটি বিষখালী নদীর ভাঙনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বেতাগী পৌরসভাটি বিষখালী নদী তীরে হওয়ায় ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে শহরকে রক্ষার করে এই বাঁধ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙনের ঝুঁকিতে বেতাগী পৌরসভাসহ আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ। এসব এলাকার বেশিরভাগ মানুষকে বসবাস করতে হয় জোয়ার ভাটার নিয়ম মেনে। নদী ভাঙন কেঁড়ে নিচ্ছে জনবসতি, মাথা গোজার ঠাঁই বসতভিটাও। সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অসংখ্য পরিবার।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস থেকে বেতাগী পৌর শহরকে রক্ষার জন্য ২০০১ সালে বিষখালী নদীতে অপরিকল্পিত ভাবে কিছু ব্লক দিয়ে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় পুরো পৌর শহর। প্লাবিত হয় আশেপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম। এরপর জরুরী মেরামতের নামে ভাঙা জায়গাগুলোতে অস্থায়ীভাবে মাটি দিয়ে শহরে পানি প্রবেশ করা বন্ধ করায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

শহর রক্ষা বাঁধ স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য ২০১১ সালে পুনরায় উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুধু ব্লক তৈরি করে বাঁশ, বালি ও বস্তার চট রেখে লাপাত্তা হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে তৎকালীন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক বিষখালী নদীর ভাঙন থেকে পৌর শহরকে রক্ষা করতে একটি প্রকল্প অনুমোদন করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এ প্রকল্পের দৃশ্যমান যেটুকু ছিল তা ওই ভিত্তিপ্রস্তর ফলক যা এখন ভাঙনের মুখে পড়ে নদীগর্ভে বিলীনের পথে। এছাড়া ভাঙন কবলিতে স্থানের আধা কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে বেতাগীর, উপজেলা পরিষদ, মডেল মসজিদ, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পুরনো কালীমন্দির, শ্মশানঘাট ও পুরাতন ডাকবাংলো। বিষখালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে এসব স্থাপনা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেতাগী লঞ্চঘাটের পশ্চিম দিকে শহর রক্ষা বাঁধটির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। সড়কের দুই পাশে স’মিল, খাবার হোটেল মিলিয়ে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেকোন সময় সড়ক ধসে বিষখালী নদীতে দোকানপাট বিলীন হতে পারে।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বড় বড় ফাটল দেখা দেওয়ার পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কর্মকর্তারা এসে ঘুরে দেখে গেছেন। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেয় নি তারা। নদীতে জোয়ারের চাপ বাড়লে ই ফাটল দেখা অংশগুলো নদী গর্ভে বিলীন হবে এবং প্লাবিত হবে পুরো পৌরসভা।

খাবার হোটেলের ব্যবসায়ী দুলাল মোল্লা জানান, বেতাগী শহর রক্ষা বাঁধ এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় এটি ভেঙে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো উদ্যোগ নেয় না। আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের আগে যদি বাঁধ উন্নয়নে কাজ না করা হয়, তাহলে এই এলাকায় প্রাণহানী হবে।

বেতাগী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমানের বলেন, গত ছয় মাস ধরে বেতাগী বাজার থেকে হাসপাতালে যাওয়ার প্রধান সড়কটি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারা ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আশ্বাসের বাস্তবায়ন করেনি। অতিদ্রুত ভাঙন রোধ না হলে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হবে।

বেতাগী পৌর মেয়র এবিএম গোলাম কবির বলেন, বেতাগী পৌরসভা রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে একাধিক বার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু আজ-কাল বলে তারা বছর পাড় করেছে। সামনের সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় হলে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেতাগীর মানুষ। এজন্য দায়ী থাকবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। তারপরেও আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি বেতাগী শহর রক্ষা করতে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ উন্নয়নের কাজ শুরু করবে ঠিকাদার। কিছু জটিলতার কারণে এতদিন কাজ বন্ধ ছিল।

নদী বন্দর/এসএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com