বিদ্যুৎকেন্দ্রে গিয়ে বিএনপি যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে জনগণ তা প্রতিহত করবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ওরা তো বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এবার যদি সেটা করে তাহলে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে। উচিত শিক্ষা দেবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। তারা তো মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারেনি। তারেক রহমান খাম্বা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি করে বিদ্যুতের খাম্বা বানিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ না দিয়ে শুধু খাম্বা লাগিয়েছিলেন। আমি আশা করবো তারা (বিএনপি) যখন বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করতে যাবে প্রতীকী হিসেবে খাম্বা নিয়ে যাবে।
লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিএনপি ৮ জুন দেশের সব বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির এই কর্মসূচির বিষয়ে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
এসময় মন্ত্রী বলেন, এখন শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। শুধু বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় না, আজ থেকে সাড়ে ১৪ বছর আগে মানুষ গ্রামে বিদ্যুৎ দিয়ে বড়জোর ফ্যান চালাতো আর লাইট জ্বালাতো। এখন গ্রামে গ্রামে এসি, রেফ্রিজারেটর, মসজিদে এসি, ধর্মীয় উপাসনালয়ে এসি চলছে। ইজিবাইক, প্রেশার কুকার, রাইস কুকার সব বিদ্যুৎ সুবিধার মাধ্যমে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি দাবি করেন, দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা বর্তমান সরকারের বিরাট সাফল্য।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি মানুষ আগের তুলনায় ভালো আছে। এখন মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে এটা সঠিক। বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেছেন ১৫ দিনের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিদ্যুতের রেশনিং করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে সবাইকে এসএমএস করে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে ব্যবহারের জন্য। সুতরাং এই অসুবিধাটা সাময়িক। বরং আমাদের সরকার শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এনেছে। বিদ্যুৎ সুবিধা নিয়ে মানুষ এখন বহুমাত্রিক সুবিধা পাচ্ছে।
কোনো দেশ থেকে বিএনপি তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির সমর্থন পায়নি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছেন, সরকারের দুঃশাসন ও দুর্নীতির কারণেই নাকি যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির নেতিবাচক ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, মানুষ পোড়ানোর অপরাজনীতি, নির্বাচন প্রতিহত ও বয়কট করার অপরাজনীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসানীতি দিয়েছে। এই ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপির মধ্যে অন্তরজ্বালা শুরু হয়ে গেছে। কারণ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল একেক সময় একে কথা বলছেন। আমার কাছে মনে হয় তিনি কেন জানি একটু হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। এজন্য একেকদিন একেক কথা বলেন। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কথা বলে আত্মতুষ্টি লাভ করারও চেষ্টা করছেন। তাদের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন প্রতিহত করার রাজনীতি তাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জুলাই থেকে বিটিআরসি কার্যকরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তাদের সক্ষমতার কিছু ঘাটতি আছে, সেই সক্ষমতা বাড়বে। তথ্যমন্ত্রণালয়ও গুজব প্রতিরোধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
বিএনপি-জামায়াত এক সঙ্গে সরকার পতনের আন্দোলন করবে বলে শোনা যাচ্ছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সবসময় এক আছে। ওরা কোনো সময় বিচ্ছিন্ন হয়নি। মাঝেমধ্যে মৌনতা অবলম্বন করে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা গণ্ডগোল করার চেষ্টা করবে। সেই গণ্ডগোল করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছে। এটি কোনো সাধারণ রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। গণ্ডগোল করার উদ্দেশ্যে দিয়েছে। সেই গণ্ডগোল তাদের করতে দেওয়া হবে না। আমরাও সতর্ক আছি, বিএনপি-জামায়াতকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটি জনগণ জানে।
নদী বন্দর/এসএস