উজানের পানিতে কুড়িগ্রামের সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বন্যা হওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ভগবতীপুর, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট, রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়নের রতিগ্রাম, রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে এসব অঞ্চলের আবাদি জমি, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, ক্লিনিক ও বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেললেও ভাঙন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। গত দুই মাসে জেলার ৬৫ বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৩১ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া চিলমারী পয়েন্টে ১৫৭ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদীতে ৫৪ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১৯৬ ও তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্ট ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চর গ্রামের মো. মতিয়ার হোসেন বলেন, গত ১৫ দিনে এ এলাকার ২০টি বসতবাড়ি নদী ভাঙনের কারণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নিজেদের উঁচু জমি না থাকায় ছোটবেলা থেকে চরের বিভিন্ন এলাকায় ঘর করে থাকি। বন্যা এলে আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না।
ওই গ্রামের দুলাল মিয়া বলেন, গত ৬ মাসে তিনবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। আগুনে পুড়লে তো ভিটে মাটি থাকে, নদী ভাঙলে সব শেষ। মাথা গোঁজানোর জায়গা থাকে না।
চর কৃষ্ণপুর গ্রামের মো. আব্বাস আলী বলেন, বন্যা হওয়ার মত পানি এখনো আসেনি। ভরা নদীতে ভাঙন কিছুটা কম থাকে। গত দুদিনে আমার প্রায় ১ বিঘা জমি নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। যতই পানি বাড়ছে ততই ভাঙন বাড়ছে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বাবলু মিয়া বলেন, গত দুদিন নদীতে পানি বাড়ছে। এ পানিতে আবারও নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুমাসে আমার ইউনিয়নে ১৫-২০টি বসতবাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। যার ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তবে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। নদী ভাঙনে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি তারপরও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।
নদী বন্দর/এসএস