দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চায় শেখ হাসিনা অনন্য নজির স্থাপন করেছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিনি দলের শৃঙ্খলার বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে। ঘোষিত কোনো কমিটির বিষয়ে কারো অভিযোগ থাকলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ধানমন্ডির সভাপতির কার্যালয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
যেসব জেলা কমিটি এখনো দেওয়া হয়নি, সেসব জেলা কমিটিগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
এ সময় তিনি দেশবিরোধী অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ এবং উন্নয়নকামী সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রদায়িকতা নির্মূল করে অসাম্প্রদায়িক ও উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে শেখ হাসিনার অব্যাহত প্রয়াসকে শক্তিশালী করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকালে তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরসহ বেশকিছু জেলা কমিটি ইতিমধ্যেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জেলা কমিটিসহ অন্য কমিটিগুলো একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়।
প্রস্তাবিত কমিটি জমা দেওয়ার পর ৮টি বিভাগের জন্য গঠিত কমিটি স্ব-স্ব বিভাগের আওতাধীন জেলা কমিটি যাচাই-বাছাই করা হয়, পর দলীয় সভাপতির সম্মতি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।
দেশব্যাপী পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে ইতিমধ্যে দলের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেসব কাউন্সিল বিদ্রোহ করছেন তারাও কঠোর সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় পড়বে।
তিনি সকলকে শৃঙ্খলা মেনে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
একটি স্বার্থান্বেষী মহলের করোনার টিকা নিয়ে অপপ্রচার প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি টিকা সংগ্রহের আগেই টিকা ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির কল্পিত অভিযোগ করেছিল। এখন তারা টিকার ব্যবস্থাপনা নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
বিএনপির কল্পিত অভিযোগ এবং টিকা নিয়ে অপপ্রচার একসূত্রে গাঁথা বলেও মনে করেন মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে, ন্যক্কারজনক রাজনীতি করছে, যেমনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়েও তারা চিকিৎসার চেয়েও রাজনীতি করেছে বেশি।
তিনি বলেন, সরকারের অন্ধ বিরোধিতা করতে গিয়ে বিএনপি নিজেদের এখন জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।
ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আইয়ুব খানের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বাঙালির অভূতপূর্ব জাগরণের দিন আজ।
ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের যে স্বাধীনতার সংগ্রাম, সেই ইতিহাসে ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান একটি তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
পুলিশের গুলিতে নিহত নবকুমার ইনস্টিটিউটের ছাত্র মতিউর রহমানকে স্মরণ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।
ওবায়দুল কাদের শহীদ আসাদের আত্মদানের কথাও স্মরণ করে বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন আর ত্যাগের ধারাবাহিকতায় বাঙালি পেয়েছে একটি স্বাধীন দেশ।
বীরের বিরত্বগাথায় উজ্জ্বল বাংলাদেশকে স্বাধীনতার চেতনায় গড়ে তুলেছেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় রূপান্তরের মাধ্যমে শোধ করতে হবে আমাদের পূর্বসূরিদের ত্যাগের ও আত্মদানের ঋণ।
নদী বন্দর / পিকে