বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে সবচেয়ে বেশি দুর্বল করেছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে সমর্থন দিয়েছিল জাতীয় পার্টি। তারপর থেকে আওয়ামী লীগ সবসময় জাতীয় পার্টিতে বিভক্তি সৃষ্টি করে রেখেছে।
রোববার (২৩ জুলাই) বনানী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ইলেকশন নয় সিলেকশন হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা তছনছ করে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধ্বংস করেছে। বর্তমান সরকার একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছে।
পেশাদার ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে এখন আর নির্বাচন হয় না, সিলেকশন করে দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা ধ্বংস করে কর্তৃত্ববাদী একনায়কতন্ত্র চালু করেছে। আগামী নির্বাচনেও যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে আর রাজনীতি বা রাজনৈতিক দল থাকবে না। দেশ এক নেতার অধীনে চলে যাবে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করা হবে।
দেশের মানুষ তাদের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে এভাবে চলতে থাকলে দেশের মানুষের অধিকার বলতে কিছুই থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন জাপা চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, সরকার বলেছে- সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। কিন্তু সরকার ছাড়া সব রাজনৈতিক শক্তি ও সাধারণ মানুষ বলছে- দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে বিশ্ববাসী দেখেছে- দলীয় সরকারের অধীনে কেমন নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে জনগণের কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না।
তিনি আরও বলেন, সরকার বলছে- ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে, সাধারণ মানুষের ধারণা শতকরা ৫ ভাগ ভোটও পড়েনি। ভোট যা পড়েছে তার প্রায় সবই তারা নিজেরাই দিয়েছে। জনগণ এই ভোটের ওপর আস্থা রাখেনি তাই তারা ভোটেও অংশ নেয়নি। নির্লজ্জভাবে এক প্রার্থীকে মেরে, এজেন্টদের বের করে দিয়ে নির্বাচনকে কলুষিত করেছে। সারাবিশ্বের কাছে প্রমাণ হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কেমন হবে।
ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের পর নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলার মুখ সরকারের নেই বলে দাবি করে জিএম কাদের বলেন, আন্দোলনে রাস্তায় নামলে নির্যাতন করা হচ্ছে। সরকার বিরোধীদের দমন করতে সবকিছুই করছে। মানুষকে মানুষ মনে করে না, বিরোধীদের ওপর পাখির মতো গুলি করা হয়। বর্তমান সরকারের দমন নীতিতে স্বাভাবিক রাজনৈতিক শক্তির টিকে থাকা সম্ভব নয়।
অর্থ ও জনবল না থাকলে মাঠে টিকে থাকা দুরূহ হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে জাতীয় পার্টির মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। পার্টির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বিঘ্নিত করেছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে, জাতীয় পার্টি অনেকটা দুর্বল হয়েছে। আমরা এই অবস্থা থেকে বের হতে চাই।
টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুস সালাম চাকলাদারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু, টাঙ্গাইল জেলা সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
নদী বন্দর/এসএইচবি