সরকার পতনে বিরোধী দলগুলোর এক দফার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই লক্ষ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা, জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সময়ে এ রায়টা কেন? মূলত দেশের মানুষ যখন পরিষ্কার করে ঘোষণা দিয়েছে- এখন আর অন্য কোনো দাবি নয়, দাবি সরকারের পদত্যাগ। ঠিক তখনই এক দফা দাবিকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্যেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এ রায়।
শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকারের জন্য আজ সংগ্রাম করছে। তারেক রহমান আজ শুধু একজন নেতাই নন, তিনি আজ দেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সংগ্রামের নেতা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের যেসব মানুষ সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে, তারা মনে করে জিয়াউর রহমান সার্বভৌমের পতাকা টিকিয়ে রেখেছেন। সেই লক্ষ্যে এখন দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান।
বর্তমান সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তারা পরপর দুইটি নির্বাচন করে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এবার আর সেই সুযোগ দেওয়া হবে না। এবার অবশ্যই জনগণের ভোটে নির্বাচন দিতে হবে। আজকে সব দল এক হয়েছে, সিপিবি একই দাবি করেছে।
নেতাকর্মীরা এখনো হামলা-মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাতে নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারে না, জামিনে থাকলেও গ্রেফতার করছে। কারাগারে এখন ২৪ ঘণ্টা লকআপে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এক ছাত্র নেতার শরীরে দেখলাম ৪৮টি গুলির চিহ্ন, তার হাতে পায়ে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়েছে। এর নাম গণতন্ত্র? গত কয়েক বছরে অনেক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা ভয়ে ঠিকমতো লিখতে পারেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
প্রশাসনকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন। দেশ ও জনগণের পক্ষে থাকুন। অন্যায় আদেশ মানবেন না। নিপীড়িত জনগণের পাশে থাকুন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের সাজার প্রতিবাদ এবং ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা শহীদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) নেতা অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের নেতা অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক আল মোজাদ্দেদী আলফে ছানী প্রমুখ।
নদী বন্দর/এসএইচবি