1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
২২ দেশ ঘুরে নিজ বাড়িতে পেঁপে চাষে সফল সুমন - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন
বরিশাল প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৩
  • ৫২ বার পঠিত

আবু বকর সিদ্দিক সুমন। বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের বায়লাখালি গ্রামের বাসিন্দা। জীবনের অধিকাংশ সময় জীবিকার তাগিদে কাটিয়েছেন ২২টি দেশে। অবশেষে নিজ দেশে এসে সফলতার মুখ দেখেছেন বিদেশে শেখা পেঁপে চাষের প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে।

নিজ বাড়িতে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন তিনি। গত বছর ১৫ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি হলেও এ বছর ২০ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। তার বাগান দেখে এলাকার অনেকেই পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়েছেন। সুমনও বেকার যুবকদের নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পেঁপে চাষ করে আত্মকর্মসংস্থান তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন।

সুমনের পেঁপে বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর ফলন আছে তার বাগানে। তিনি জানান, ১৯৭৭ সালে নবম শ্রেণির পাঠ চুকিয়ে রেলওয়েতে চাকরি নেন। চার বছর প্রজেক্টে চাকরি শেষ হলে ১৯৮১ সালে লেবাননের বৈরুতে পাড়ি জমান। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। সিরিয়া, ফিলিস্তিন ঘুরে ১৭ মাস পর দেশ ফিরে বেকার হয়ে ঠাঁই নেন ঢাকার ফকিরারপুল এলাকায়। কখনো রংমিস্ত্রি, কখনো দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৬ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে ইন্টারভিউ দিয়ে কুয়েতে রংমিস্ত্রির কাজ পান। সেখান থেকে এ পেশায় ২২টি দেশ ভ্রমণ করেন।

পরে ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে ব্যবসা করেন। ২০১৫ সালে দেশে ফিরে ঢাকায় ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু দোকানে ডাকাতি হওয়ায় সব হারাতে হয়। এদিকে স্ত্রী কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লে শেষপর্যন্ত বাবুগঞ্জের বায়লাখালি গ্রামে ফিরতে হয়। ২০২১ সালে মারা যান স্ত্রী। এরপর পুরোপুরি একা ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় পেঁপে চাষের ওপর যে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, তা প্রয়োগ করেন নিজ বাড়ির পতিত জমিতে।

গত মৌসুমে প্রায় ১৫ লাখ টাকার কাঁচা ও পাকা পেঁপে বিক্রি করেন। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পেঁপে চারা বিক্রি করে ৭ লাখ টাকা লাভ করেছেন। এবার কাঁচা ও পাকা পেঁপে বিক্রি করে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন। শাহী, কাশ্মীরি, টপ লেডি জাতের ১ হাজারেরও বেশি পূর্ণবয়স্ক পেঁপে গাছ আছে। চারাগুলো এপ্রিল মাসে রোপণ করেছেন। জুলাই মাসে ফল এসেছে। এখন বিক্রির মৌসুম। চার মাসের উৎপাদনে তিনি সন্তুষ্ট। সেই সঙ্গে যারা বেকার আছেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানান অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে বাড়ির পতিত জমিতে পেঁপে চারা রোপণ করে নিজের ভাগ্য ফেরাতে।

সফল এই পেঁপে চাষি বলেন, ‘আমি বেকার ও শিক্ষার্থীদের পেঁপে চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। একজন শিক্ষার্থী যদি লেখাপড়ার পাশাপাশি মাত্র ২৫টি পেঁপে গাছ লাগায় এবং যত্ন করে। ২৫টি পেঁপে গাছ থেকে ১ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।’

বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি তার কাছ থেকে উন্নত জাতের চারা নিয়ে চাষ করে সফল হয়েছি। আমার শিক্ষকতার পাশাপাশি নতুন আয়ের উৎস তৈরি হয়েছে।’

এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মামুনুর রহমান বলেন, ‘আমরা তার বাগান পরিদর্শন করেছি। তিনি এলাকায় এখন পেঁপে চাষে সফল উদ্যোক্তা। তাকে অনুকরণ করে অনেকেই পেঁপে চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। এ ধরনের কাজে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়।

নদী বন্দর/এসএইচবি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com