‘বাংলাদেশে গুমের আতঙ্ক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত’ বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। স্বৈরাচারী সরকারের গড়ে তোলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়া এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা বিরোধী দল ও মতের মানুষদের অল্পদিন অথবা দীর্ঘদিন কিংবা চিরদিনের জন্যে নিখোঁজ করে দেয়।’
তিনি বলেন, ‘গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা। প্রায় দেড় দশক ধরে ৬০০ এর বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছে।’
আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব ৩০ আগস্ট গুমের শিকার ব্যক্তিবর্গের স্মরণে ‘আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিরোধী দলশূন্য একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্যই গুমকে অব্যর্থ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই নৃশংস গুমের শিকার হয়েছেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু ও চৌধুরী আলম, সুমন, জাকিরসহ অসংখ্য মানুষ। এদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, ছাত্র, যুবক, সাংবাদিকসহ ভিন্ন মতের লোকজন। আরেকটি অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে অন্য দেশে। গুম হওয়া মানুষদের বেদনার্ত পরিবাররা এখনও পথ চেয়ে বসে আছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শাসকেরা রাষ্ট্র সমাজে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির জন্যই গুমকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে। মূল লক্ষ্য বিরোধী রাজনীতি ও বিরোধী কণ্ঠকে নির্মূল করা।’
তিনি বলেন, ‘গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য। জনসমর্থনহীন ও ভোটারবিহীন সরকার গুমকে টিকে থাকার অবলম্বন করেছে। এই ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানবতাহীন এক নিষ্ঠুর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।’
অবিলম্বে গুমের শিকার সব নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কেবলমাত্র একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলেই গুম, অপহরণ ও বিচার বহিভূর্ত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।
নদী বন্দর/এসএইচবি