মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনের জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে ‘দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন’ বিচারপতির এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আইনজ্ঞদের মতে এটি কোনো বিচারকের ভাষা হতে পারে না।’
বুধবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ শেষে প্রশ্নোত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমানের জামিন শুনানিতে একজন বিচারপতির বক্তব্য নিয়ে দেশে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন’। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পত্রিকায় দেখেছি, আমি আইনজীবী না হলেও আমার বাবা-মা ও শ্বশুর আইনজীবী। আমিও কয়েকদিন আইন কলেজে ঘোরাঘুরি করেছি। আইনজ্ঞদের সঙ্গে আমারও কথাবার্তা হয়, তাদের মতে, এটি কোনো বিচারকের ভাষা হতে পারে না। অথচ বিচারপতি বিচার কাজের সময় এমন ভাষা ব্যবহার করেছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি অবিচারকসুলভ ভাষা বলে আইনজ্ঞরা মতপ্রকাশ করেছেন। যেহেতু বিষয়টি বিচারালয়ের এবং প্রধান বিচারপতির নজরে এসেছে, সেহেতু এটি তিনিই দেখবেন। আর তিনি যদি মনে করেন, এটি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে পাঠাবেন, তা তার এখতিয়ার। এতটুকুই আমি বলতে পারি।’
দুটি মামলার পরোয়ানা থাকায় বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন এ্যানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন—তাকে ডাকাতের মতো ধরে নেওয়া হয়েছে। সরকার এক তরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। এমন অভিযোগের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব কি বলতে চাচ্ছেন যে, পরোয়ানা থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না?’
পরোয়ানা থাকলে তো আওয়ামী লীগ নেতাও গ্রেপ্তার হবেন এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কারো বিরুদ্ধে ভাংচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আছে, তাকে গ্রেপ্তার করা হবে— এটাই স্বাভাবিক। কাজেই তারা যে আইন ও বিচার মানেন না, তারই প্রমাণ হচ্ছে মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য।’
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিবৃতির বিষয়ে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে মন্দা চলছে। এ সময়ে আমাদের প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক ভালো। এখন প্রায় ষাট মিলিয়ন। তবে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে অনেক কথা হয়। পৃথিবীর সব দেশে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। যদিও এ কারণে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। টিসিবিসহ বিভিন্নভাবে প্রণোদনা দিয়ে সরকার চেষ্টা করছে, এর ফলে বাংলাদেশে কোনো আহাজারি নেই। বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের ঘাটতি হয়নি, ইউরোপ-আমেরিকায় হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারির সময় পৃথিবীর ২০টি দেশে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির হার হয়েছিল, তার মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। আমাদের অবস্থান ছিল তিন নম্বরে। আমাদের অর্থনীতি অনেক ভালো। এখনও বিশ্বের গড় প্রবৃদ্ধির চেয়ে আমাদের দ্বিগুণেরও বেশি। এটি আইএমএফের প্রতিবেদন। এখন অপেক্ষায় আছি, এ প্রতিবেদনের ওপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী বলেন, সেটা শুনতে চাই।
নদী বন্দর/এসএইচবি