ঘরের মাঠে কিউইদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেওয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৮১ রানে অলআউট হয় নিউ জিল্যান্ড। নাজমুল হোসেন শান্তর অভিষেক নেতৃত্বের ম্যাচে বাংলাদেশ ১৫০ রানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এই জয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের নতুন চক্র দারুনভাবে শুরু করলো লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের পর ঘরের মাঠে রান ব্যবধানে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়।
তাইজুলের ফাইফার
ক্রিজ আঁকড়ে থাকা ড্যারিল মিচেলকে ফিরিয়ে শুরুতে স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন নাঈম হাসান। ক্রিজে আসেন সাউদি। আরেক প্রান্তে আগের দিনের অপরাজিত সোধী। এক প্রান্তে সাউদি খেলতে থাকেন আক্রমণাত্বক ক্রিকেট, অন্য প্রান্তে সোধী ডিফেন্স করে যাচ্ছিলেন। দুজনের প্রতিরোধে দিচ্ছিলো চোখ রাঙানি। সেই জুটিকেও থামিয়ে দিলেন তাইজুল। তার স্লো বলে মারতে গিয়ে শর্ট মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন সাউদি। মাত্র ২৪ বলে ৩৪ রান করেন এই পেসার। ৭৪ রান দিয়ে পঞ্চম উইকেট নেন তাইজুল। এটি তার ক্যারিয়ারের নবম ফাইফার। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম।
মিচেলকে ফিরিয়ে স্বস্তি এনে দিলেন নাঈম
লড়তে থাকা ড্যারিল মিচেলকে সাজঘরে পাঠান নাঈম হাসান। উইকেটের মিছিলে ড্যারিল মিচেল একাই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ড্যারিল মিচেল। গতকাল হার ঠেকানোর পর আজ দিনের প্রথম আধঘণ্টাও কাটিয়ে দিয়েছিলেন সাবলীলভাবে। নাঈম হাসানকে সুইপ করতে গিয়েই যেন বিপদ বাড়ে। নাঈমের বল হালকা বাউন্স করেছিল, মিচেল সুইপ করেন ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারলেগে। সেখানে থাকা ফিল্ডার তাইজুল দৌড়ে ক্যাচ নিতে ভুল করেননি। ১২০ বলে মিচেলের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৫৮ রান। বাংলাদেশের প্রয়োজন আর মাত্র ২ উইকেট। ক্রিজে আছেন টিম সাউদি ও ইশ সোধী।
তিন উইকেট দূরে
জয় থেকে মাত্র তিন উইকেট দূরে বাংলাদেশ। সিলেট টেস্টের পঞ্চম দিন শনিবার (২ ডিসেম্বর) এই তিন উইকেটের খোঁজে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। অপরাজিত থেকে দিন শুরু করেন মিচেল-সোধী।
বড় দলকে হারালে আত্মবিশ্বাস বাড়ে
দ্বিতীয় ইনিংসে এখন পর্যন্ত চার উইকেট শিকারি তাইজুল ইসলাম বলেন, বড় দলকে হারানোর মজাই আলাদা। এখনও জিতি নাই, তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বড় দলকে হারালে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, দল বদলে যাওয়ার আভাস থাকে। পুরো সার্কেল (টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ) যেন এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারি। কয়টা ম্যাচ জিতব বা জিতব না জানি না, তবে বাংলাদেশকে যেন ভালো কিছু দিতে পারি সেই চেষ্টা থাকবে।
হাল ছাড়েছে না নিউ জিল্যান্ড
দলের স্পিনার এজাজ পাটেল চতুর্থ দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথাই বললেন, ‘হ্যাঁ। পরিস্থিতিটা কঠিন। আমাদের কাল ব্যাটিংয়ে লম্বা সময় কাটাতে হবে। এখনও ক্রিজে মিচেল আছে যে কিনা আজ খুব ভালো ব্যাটিং করেছে এবং আমরা জানি ইশ সোধী কতটা ভালো ব্যাটিং করতে পারে। আমি মনে করি আমরা যতটা সম্ভব লড়াই করবো যেন আমরা গর্ব করতে পারি। মনে হচ্ছে দারুণ একটি দিন যাবে। আমরা মাঠে নামবো এবং তীব্র লড়াই করবো যেটা আমাদের প্রয়োজন।’
চতুর্থ দিন শেষে
বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ৩৩২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। স্পিন বোলিং তোপে রীতিমতো নাস্তানাবুদ তারা। ৬০ রান যেতে না যেতেই ৫ উইকেট হারানো নিউ জিল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলে চতুর্থ দিন শেষ করেছে। বাংলাদেশের চেয়ে এখনো তারা ২১৯ রানে পিছিয়ে আছে। আজ শেষ দিনে জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩ উইকেট। আর নিউ জিল্যান্ডের প্রয়োজন ২১৯ রান। এই পরিস্থিতিতে যা অসম্ভবই বটে।
ড্যারিল মিচেল ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন। তার সঙ্গে ৭ রানে অপরাজিত ইশ সোধী। বল হাতে তাইজুল ইসলাম ৪টি উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন শরীফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম ইসলাম।
নদী বন্দর/এসএইচবি