নিজের স্মৃতিবিজড়িত শহরে এসে হেঁটে প্রিয় জায়গাগুলো ঘুরে দেখেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ সময় তিনি সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। আড্ডা দেন বন্ধু এবং এক সময়ের সহকর্মীদের সঙ্গে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পাবনা সার্কিট হাউজ থেকে গাড়িতে চড়ে প্রথমে রাষ্ট্রপতি পাবনা ডায়াবেটিকস সমিতিতে যান। সেখানে প্রিয় মানুষদের সঙ্গে কিছু সময় কাটানোর পর পায়ে হেঁটে আসেন লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। দোকান মালিক এবং কর্মচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে তিনি যান প্যারাডাইস সুইটস-এ। সেখানে তিনি সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করে প্রিয় ঝুরি চানাচুর ও বুন্দিয়া খান।
এরপর রাত ৮টার কিছু সময় আগে রাষ্ট্রপতি প্রবেশ করেন স্মৃতিবিজড়িত পাবনা প্রেসক্লাবে। সেখানে সাংবাদিক, বন্ধু এবং এক সময়ের সহকর্মীদের সঙ্গে তিনি আড্ডায় মেতে ওঠেন। পুরোনো দিনের কথা মনে করে স্মৃতি রোমন্থন করেন। এক সময় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত ছিলেন। পাবনা প্রেসক্লাবের ছাদে আড্ডা নিয়মিত দিতেন- সেসব কথা তিনি উল্লেখ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা প্রেসক্লাবে আড্ডা শেষে নির্ধারিত গাড়িতে সার্কিট হাউজে ফেরেন রাষ্ট্রপতি।
এ সময় রাষ্ট্রপতির বন্ধু পাবনা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলাম, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর শিবজিত নাগ, প্রবীণ সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক ভোলানাথ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের প্রিয় মানুষ মহামান্য রাষ্ট্রপতি আজ আমার দোকানে এসেছিলেন। এসে আমাদের সাথে কথা বললেন, কেমন আছি জানতে চাইলেন। খোঁজখবর নিলেন। খুবই খুশি হয়েছি।’
ভোলানাথ ঘোষ বলেন, ‘আমার এই দোকানে তিনি এক সময় আড্ডা দিতেন। আমাদের এখানকার সকালের নাস্তা তিনি খুব পছন্দ করতেন। এত বড় মানুষ হয়েও তিনি এখনও তেমনি নিরহঙ্কারী আছেন। আমাদের দোকান তিনি এখনও মনে রেখেছেন ভেবে খুব ভালো লেগেছে।’
প্যারাডাইস সুইটসের মালিক আবু সাইদ মো. নুরুল আমিন বলেন, ‘রাজনৈতিক ও ছাত্রজীবনে তিনি (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) আমাদের দোকানে বসতেন, আড্ডা দিতেন। আমাদের দোকানের ঝুরি চানাচুর ও বুন্দিয়া ছিল তার খুব পছন্দের। আজকেও তিনি ঝুরি চানাচুর ও বুন্দিয়া খেয়েছেন। তার আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ।’
পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি পাবনা এলে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি সাংবাদিকবান্ধব। কারণ তিনি নিজেও ১৯৭৮ সালে সাংবাদিকতা করতেন। আজকেও প্রেসক্লাবে আড্ডা দিতে গিয়ে তিনি পুরোনো অনেক স্মৃতির তুলে ধরেছেন। সবার সঙ্গে বসে চিড়া মুড়ি খেয়েছেন।’
এর আগে তিনদিনের সফরে মঙ্গলবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারযোগে ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে অবতরণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর তাকে বহনকারী গাড়িবহর সড়ক পথে বিকেল ৩টায় সার্কিট হাউসে প্রবেশ করে। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এরপর বিশ্রাম শেষে সন্ধ্যার দিকে স্মৃতিবিজড়িত নিজের প্রিয় শহরের প্রিয় স্থানগুলোতে তিনি ঘুরতে বের হোন।
তিনদিনের সফরে তিনি স্থানীয় কয়েকটি কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করবেন। আগামী ১৮ জানুয়ারী তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর ১৫ মে প্রথমবার চারদিনের এবং ২৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বার তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নিজ জেলা পাবনায় এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি।
নদী বন্দর/এসএস